বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


গির্জা থেকে দামেস্কের গ্রেট মসজিদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম

সিরিয়ার প্রথম ও পৃথিবীর প্রাচীনতম মসজিদগুলোর মধ্যে একটি হলো এই উমাইয়া মসজিদ। ৬৩৪ সালে জন দ্য ব্যাপ্টিস্ট খ্রিষ্টা নদের ক্যাথেড্রাল এই গির্জাটি উৎসর্গ করে দেয়। পরে ৭১৫ খ্রিষ্টাব্দে এখানে উমাইয়া মসজিদ নির্মাণ করা হয়।

ইতিহাসবিদদের ভাষায়, ৬৩৪ সালে মুসলিম আরব শাসক খালিদ-ইবন-ওয়ালিদ দামেস্ককে নতুনভাবে নির্মাণ ও অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। এই দশকের পরে, ইসলামী খিলাফত শাসন উমাইয়া রাজবংশের অধীনে আসে। তখন দামেস্ক –কে মুসলিম বিশ্বের প্রশাসনিক রাজধানী হিসেবে নির্বাচন করা হয়।

ষষ্ঠ উমাইয়া খলিফা আল-ওয়ালিদ (৭০৫-৭১৫) ৭০৬ সালে বায়জানাইথ ক্যাথেড্রাল এর পাশে একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য একটি কমিশন গঠন করেন। এর পূর্বে, ক্যাথেড্রাল গির্জাটি স্থানীয় খ্রিস্টানরা ব্যবহার করত, যা এখনো ব্যবহৃত হয়, কিন্তু এই গির্জাটির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মুসলমানদের জন্য প্রধান প্রার্থনা কক্ষ (মুসাল্লা) ছিল।

আল-ওয়ালিদ মুসাল্লা সহ ক্যাথেড্রাল গির্জাটির বেশিরভাগ অংশ ভেঙে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে মসজিদ নির্মাণ করেন, যার নির্মাণকাজ তিনি ব্যক্তিগত ভাবে পরিদর্শন করেন।

এই নতুন মসজিদটি প্রধান মসজিদ হিসেবে ভূমিকা রাখে যা, দামেস্ক শহরের নাগরিকদের প্রার্থনার জন্য ব্যবহৃত হত।খ্রিস্টানদের আন্দোলনের মুখে আল-ওয়ালিদ দামেস্ক শহরের সব গির্জা খ্রিস্টানদের ফিরিয়ে দেয়া হয়।

মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হয় ৭১৫ খ্রিস্টাব্দে, তার উত্তরাধিকার, সুলায়মান ইবন আব্দ-আল-মালিক (৭১৫-৭১৭) এর শাসনামলে।

দশম শতাব্দীর পারস্য ইতিহাসবিদ ইবন-আল-ফাকিহ্‌ এর মতে, এই নির্মাণকাজে তৎকালীন ৬,০০,০০০ থেকে ১০,০০,০০০ দিনার ব্যয় হয়। পারস্য, ভারতীয়, গ্রীক এবং মরক্কোর শ্রমিকদের সমন্বয়ে প্রায় ১২,০০০ শ্রমিক এই নির্মাণকাজে নিয়োজিত হয়।

এই মসজিদে মোট তিনটি মিনার রয়েছে। আর এর সবচেয়ে বড় গম্বুজটির নাম হলো ‘ডোম অব ঈগল’।

ইসলামিক ইতিহাসে এটি মুসলিম স্থাপত্যশিল্পের প্রথম স্মৃতিস্মারক। শুধু তা-ই নয়, ইউনেস্কো ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’-এর খাতায়ও নাম লিখিয়েছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই মসজিদটি।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো সিরিয়ায় অনবরত চলতে থাকা গৃহযুদ্ধের শিকার হয়ে এর বেশ খানিকটা সৌন্দর্যই হারিয়ে গিয়েছে।

২০০১ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পল উমাইয়া মসজিদ দর্শনে আসেন জন দ্য ব্যাপ্টিস্ট এর সাথে জড়িত ধ্বংসাবশেষ দেখতে। ইতিহাসে তিনিই একজন পোপ হিসেবে প্রথম কোনো মসজিদ দর্শনের জন্য যান।

তথ্যসূত্র : ইসলামিক ল্যান্ডমার্ক।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ