বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


যেমন কাটলো একজন রিকশাওয়ালার ঈদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ঈদ মানেই আনন্দ। আর এই ঈদেই পরিবারের সঙ্গে আনন্দঘন একটা মূহুর্ত কাটাতে উন্মূখ থাকে সবাই।

কিন্তু ঈদের দিনেও আমাদের সেবা দিয়ে যায়, আনন্দ দিয়ে যায় কিছু শ্রেণী পেশার মানুষ!

হুম আমি তাদেরই কথা বলছি ট্রাফিক পুলিশ,বিভিন্ন পরিবহণ শ্রমিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ তাদের সাথে একই কাতারে রয়েছেন দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল গুলো যারা প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সর্বক্ষণ চেষ্টা করছেন।

এ শ্রেণীর লোকদের মধ্যে আমরা যাদেরকে খুব ভালো করে চিনি, তারা হলো আমাদের রিকশাওয়ালা ভাই।

এমনই এক অসহায় হত দরিদ্র  আবু মিয়া নামের রিকশাচালকের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জুনায়েদ হাবীব

আওয়ার ইসলাম: ভাইজান কেমন আছেন?

আবু মিয়া: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

আওয়ার ইসলাম: আপনি ঈদে পরিবারকে সময় না দিয়ে এখন রিকশা নিয়ে বের হলেন যে?

আবু মিয়া: বাবা! তা কী করি সাধে? আমি যদি অহন রিকশা লইয়্যা না নামতাম তোইলে পোলাপানের পেডে ভাত নামবো কেমনে?

আওয়ার ইসলাম: ঈদে রিকশা নিয়ে নেমেছেন কেমন লাগছে আপনার?
মানুষ থেকে ঈদ উপলক্ষ্যে কি বাড়তি টাকা পাচ্ছেন?

আবু মিয়া: হ বাবা মোগো বউ পোলাপান ছাইড়া ভাল লাগেনা না ঠিক কিন্তু অহন যদি রিকশা লইয়্যা না নমাতাম তোইলে মাইনষের থেইক্যা আর বাড়তি টাকা ইনকাম করতে পারতাম না।

তয় বড় মাইয়্যাডারে কইয়্যা আইছি, তার লেইগা আইজকা জামা লইয়্যা জামু!!

আওয়ার ইসলাম: আপনার ছেলে মেয়েদের এখনো জামা কিনে দেননি?

আবু মিয়া: কোত্থেইকা কিন্না দিমু! প্রতিদিন যা ইনকাম করি ঘর ভাড়া রিকশা ভাড়া আর বাজার কইরায় শেষ হইয়্যা যায় আর সেখান থেইকা বাচানো ট্যাকা দিয়া ছোট পোলারো একটা পান্জাবি কিন্না দিসি মাইয়্যাডারে অহনো কিসু দিতে পারলাম না।

আওয়ার ইসলাম: আপনার ছেলেমেয়ে কয়জন? এবার ঈদে ছেলের সাথে নামাজ আদায় করতে পেরেছেন কি?

আবু মিয়া: একটা মাইয়্যা একটা পোলা আলহামদুলিল্লা এবার ঈদে পোলারে লইয়্যায় নামাজ পরসি

আওয়ার ইসলাম: আচ্ছা আপনি যা টাকা আয় করেন তা দিয়ে তোহ কোনো মতে কষ্ট করে হলেও আপনার ছোট্ট এই পরিবারটি চলতে পারে তাহলে এখনো কেন এতোটা দরিদ্রতা আপনার পরিবারে যে আপানার ছোট্ট ছেলেকে ঈদের জামা কিনে দিয়েছেন আর মেয়েকে এখনো ও দিতে পারেননি এমন কি আপনি আপনার স্ত্রী ও কিছু কিনেনি কারন কি তার?

কথাটি বলতে শেষ না করতেই ভারাক্রান্ত মনে করতেই দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলতে লাগলেন।

আবু মিয়া: কে বুঝে কার কথা! গ্রামের বাড়ীতে অসুস্থ মায়ের খরচপাতী আমার যোগান দেওয়া লাগে  গ্রামের বাড়ীতে আবিয়াত্তা (অবিবাহিত) ছোট বইন ও আসে গত বছর তাগোরে কিসুই কিন্না দেয়নাই তাই এইবার মা আর বোইন  রে শাড়ী দিসি এটাই আমার সবচাইতে পাওয়া।

এই নিয়া ঈদে আইজ সহ তিনবছর ঈদের দিনে রিকশা চালায়।  মাইনেষের থেইক্যা খুজার আগেই তারা ডবল ট্যকায় দিয়া দেয়

সুপ্রিয় পাঠক এটা হলো আবু মিয়ার কথা আমাদের আশে পাশে এমনই অনেক আবু মিয়া আছে পেশায় ভিন্নতা থাকলেও তাদের অসহায় আর দরিদ্রতা একই!

তারা শুধু ঈদের দিনে  বাড়তি টাকা আয়ের আশা নামে বন্দরনগরীতে  আমরা শুধু এটুকুও করতে পারবো না?

তামিম/আওয়ারইসলাম

দল-মত নির্বিশেষে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ান: আল্লামা বাবুনগরী


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ