শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

ছড়া কবিতায় ঈদ আনন্দ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম:  মুসলমানদের মাঝে সবচেয়ে আনন্দের উত্‍সব ঈদ । বাঁকা চাঁদের ঝিলিকমাখা সরু হাসি আর উচ্ছ্বাসভরা উল্লাস নিয়ে আমাদের মাঝে আগমন ঘটে আনন্দের দিন ঈদের ।

হিংসা বিভেদ ভুলে সব মুসলিম অনাবিল সুখ আনন্দে নেচে ওঠে । দুঃখ হতাশার দুয়ার এঁটে রাশি রাশি আনন্দ আর হই হুল্লোর আল্হাদে মেতে ওঠে মুসলিম । দুস্ত গরীবের মুখেও ম্লান স্নিগ্ধ হাসি ফুটে ওঠে ।

তাইতো ঈদের এই সুখানন্দে কবিরা হ্বদয়ের মাধুরি মিশিয়ে মনের আবেগ ঢেলে লিখে গেছেন অসংখ্য ছড়া কবিতা গান । ছন্দে ছন্দে জাগিয়েছেন শিল্প । ঈদ আসলেই তাই কণ্ঠে কণ্ঠে বেঁজে ওঠে কবি নজরুলের গান ।

‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে
এলো খুশীর ঈদ ।
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে
শোন আসমানি তাকিদ ।’

যে গানটি ছাড়া অপূর্ণই যেনো রয়ে যায় ঈদানন্দ । জানা যায় বিশ শতকের গোড়ার দিকে বাংলা কবিতায় শুরু হয় ঈদ নিয়ে লেখালেখি ।  সেই থেকে আজ পর্যন্ত  রচিত হয়েছে বহু ছড়া কবিতা গান । ঈদকে উপলক্ষ্য করে সৈয়দ এমদাদ আলীর ‘ঈদ’ কবিতাটিই সম্ভবত রচিত প্রথম ঈদ-বিষয়ক কবিতা ।

১৯০৩ সালে তারই সম্পাদনায় প্রকাশিত মাসিক নবনূর পত্রিকার ঈদ সংখ্যায় কবিতাটি ছাপা হয় । জীবনের বিষাদ অবসাদ দূর করে এ দিনে। নতুন করে হেসে ওঠতে বলে কবি লিখেছেন ।

“ধর্ম ও কর্মরে জীবনের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করি
আজ জীবনের আবহে হও অগ্রসর,
নাহি তাতে কোন লাজ ।
যে চেতনা থাকে একদিন জাগি, দীর্ঘ নিদ্রা তার পরে,
সে তো আনে শুধু ঘন অবসাদ
জীবনে ঢালে অনন্ত বিষাদ দেও
তারে দূর করে । ”

মুসলিম রেনেসাঁর কবি ফররুখ আহমদ ও লিখেছেন ঈদ নিয়ে । তিনি পুরো দুনিয়াটাকে ঈদগাহ্‌র সাথে তুলনা করে ‘ঈদগাহ হবে দুনিয়াটাই’ কবিতায় লিখেছেন-

আজকে এল খুশীর দিন
দেখ না চেয়ে খুশীর চিন
দেখ না চেয়ে আজ
রঙিন খুশীর ঝলক ঈদগাহে ।
জামাত ছেড়ে থাকবে যে ঘরের কোণে
রইবে সে রইবে হয়ে একপেশে
একলা থাকায় দুঃখ তাই ।
সবাই মিলে একদলে
এক আশাতে যাই চলে
এক আশাতে যাই বলে
ঈদগাহ হবে দুনিয়াটাই ।

খুশির দিনে সবাই মিলে একসাথে ঈদগাহে যাওয়ার যে আনন্দ সেটাই উপভোগ করার আহব্বান কবির কবিতায় । এই ঈদের দিনে এক আশাতে সুখ দুঃখ ভুলে ধনী গরীব ছুটে ঈদগাহের দিকে । তাই কবি পুরো দুনিয়াটাকেই ঈদগাহ বলেছেন ।

মুসলিমদের মহামিলন মেলা । আনন্দের উৎসব, ঈদকে নিয়ে কবি কায়কোবাদ ও ‘ঈদ আবাহন’ নামে কবিতাটিতে চমত্‍কার বলেছেন-

“এই ঈদ বিধাতার কি যে শুভ উদ্দেশ্য মহান, হয় সিদ্ধ,
বুঝে না তা স্বার্থপর মানব সন্তান।
এ তো নহে শুধু ভবে আনন্দ উৎসব ধুলা খেলা ।
এ শুধু জাতীয় পুণ্যমিলনের এক মহামেলা।”

ঈদ আসলেই ব্যক্তি হতে পরিবার সমাজ । সবার মাঝে সৃষ্টি হয় নব উদ্দিপনা । নতুন জাগরণ । সমাজে ঈদনান্দ খুশীর প্রভাব সম্পর্কে কবি আ.ন.ম বজলুর রশিদ তার 'ঈদ আসে' কবিতায় লিখেছেন-
ঈদ আসে হাসি-খুশী

তোমাদের আমাদের সকলের ঘরে অনেক আনন্দ নিয়ে
কিছুক্ষণ ভুলে যাই দুঃখ জ্বালা যত
আজ শুধু মেলামেশা অন্তরঙ্গ হয়ে থাকা
অবিরত আল্লাহর প্রশংসায় গান,
তাঁর দয়া দাক্ষিণ্যের অমৃত ঝরে।

ঈদ পুণ্যমিলনের মহামেলা খুশি আনন্দের দিন হলে ও ইসলামের নির্দেশনা সঠিকভাবে অনুসরণ না করায় ঈদের দিনেও গরিব-দুঃখী ও অসহায়দের কষ্টের যেনো সীমা থাকে না । ক্লিষ্ট অনাহার অর্ধাহারেই কাটাতে হয় তাদের ঈদের দিনটি ও । এ দিকটি ফুটিয়ে তুলেছেন কবি শাহাদাত হোসেন তার ‘বাংলার ঈদ’ কবিতায় । কবির ভাষায়

“ বাংলার মুসলমান শুধু চেয়ে রয়-
মৌন ম্লান ক্লিষ্ট মুখ নির্বাক নিশ্চল ।
ফিত্রার খুশী কোথা তার?
কি দান সে দিবে ক্ষুধিতেরে?
নিজেই কাঙাল রিক্ত- ভিক্ষা মাগি ফিরে দ্বারে দ্বারে।”

কবিতায় কবি ইসলামের বিধান ফিতরা আদায়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন । ঠিকমত ফিতরা ও যাকাত দেয়া হলে অসহায়, দরিদ্রদের ঝিলিক তুলবে ঈদের চাঁদ ।

একটু হাসি আনন্দে তারা ও নেচে ওঠবে অনাবিল সুখে । সমাজে নেমে আসবে শান্তি-সুখের ফল্গুধারা । এ দিকটির প্রতি ইঙ্গিত করেই সম্ভবত কবি গোলাম মোস্তফা ঈদকে মানবতার বিরাট অংশ বিবেচনা করেন । প্রীতি সমপ্রীতি মিলনমেলার আনন্দ মেখে ঈদ উৎসব কবিতায় তিনি লিখেছেন ।

“ কণ্ঠে মিলনের ধ্বনিছে প্রেম-বাণী,
বক্ষে ভরা তার শান্তি,
চক্ষে করুণার স্নিগ্ধ জ্যোতি ভার,
বিশ্ব-বিমোহন কান্তি প্রীতি ও মিলনের
মধুর দৃশ্যে এসেছে নামিয়া যে নিখিল বিশ্বে
দরশে সবাকার মুছেছে হাহাকার বিয়োগ-বেদনার শ্রান্তি।”

ঈদ নিয়ে সবচেয়ে বেশি কবিতা ও গান লিখেছেন জাতিয় কবি নজরুল । তার কণ্ঠে বেজে ওঠেছিল সাম্যের গান । তাই ঈদের দিনে ছোট বড় ধনী গরীবের ভেদাভেদ ভুলে গেয়ে ওঠি

আজি ইসলামি ডঙ্কা গরজে ভরি জাহান,
নাই বড় ছোট সকল মানুষ এক সমান,
রাজা প্রজা নয় কারো কেহ ।
কে আমীর তুমি নওয়াব বাদশা বালাখানায় ?
সকল কালের কলঙ্ক তুমি জাগালে হায়
ইসলামে তুমি সন্দেহ ।
ইসলাম বলে সকলের তরে মোরা সবাই,
সুখ দুখ সম ভাগ করে নেব সকলে ভাই
নাই অধিকার সঞ্চয়ের ।

ইসলামে গরীব দুখি অসহায় ক্ষুদার্তের প্রতি সমব্যাথি হয়ে যে যাকাত ছদকার বিধান প্রনয়ন করেছে । তা পালনার্থে ইসলাম শিখিয়েছে ভ্রাতৃত্ববোদ । যাকাত ফেত্‍রা দানের প্রতি কবি তার ঈদ মোবারক কবিতায় উদ্বার্থ আহব্বান করে কী সুন্দর লিখেছেন,

ঈদ উল ফিতর আনিয়াছে তাই নববিধান,
ওগো সঞ্চয়ী,উদ্বৃত্ত যা করিবে দান,
ক্ষুদার অন্ন হোক তোমার !
ভোগের পেয়ালা উপচায়ে পড়ে তব হাতে,
তৃষ্ণাতুরের হিসসা আছে ও-পেয়ালাতে,
দিয়া ভোগ কর, বীর দেদার ।
বুক খালি করে আপনারে আজ দাও জাকাত,
করো না হিসাবী, আজি হিসাবের অঙ্কপাত !
একদিন করো ভুল হিসাব ।
দিলে দিলে আজ খুনসুড়ি করে দিললগী,
জামশেদ বেঁচে চায় শরাব ।

আহ্ ঈদের দিনের সে কী আনন্দ । হৈ হুল্লোর । নতুন জামা নতুন জুতায় হেসে ওঠে যেনো বাঁকা চাঁদ । ছোটদের তো কথাই নাই কচকচে টাকা আর বড়দের স্নেহে আনন্দ আর ধরে না । ঈদগাহে যেতে সেতো অন্যরকম আনন্দ ।পখে পথে সালাম প্রিয়জনদের কোলাকুলি । কবি নজরুল সে আনন্দকেই চিত্রায়ন করেছেন ঈদ মোবারক কবিতায়

পথে পথে আজ হাঁকিব, বন্ধু,
ঈদ মোবারক ! আসসালাম !
ঠোঁটে ঠোঁটে আজ বিলাব শিরনী
ফুল-কালাম !

শাওয়ালের আকাশে ঘটা করে আগমন ঘটে রূপোলী চাঁদের ।পশ্চিমাকাশে ঝিলিক তুলে মুচকি হেঁসে জানিয়ে দেয় ঈদ এসেছে, সবার মাঝে/সাজো রঙিন সাজে । এক ঈদ চলে গেলে প্রতিক্ষার প্রহর গুনতে থাকে মানুষ । আবার কবে ফিরে আসবে সুখ স্মৃতি আনন্দের এই ঈদ । দীর্ঘ প্রতিক্ষিত এ দিন নিয়ে কবি বেগম সুফিয়া কামাল তাঁর ‘ঈদের চাঁদ’ কবিতায় লিখেছেন-

“চাঁদ উঠিয়াছে,
ঈদের চাঁদ কি উঠেছে ?
শুধায় সবে ।
লাখো জনতার আঁখি থির আজি
সুদূর সুনীল নভে ।
এই ওঠে,ওই উদিল গগনে সুন্দর
শিশু চাঁদ— আমিন । আমিন ।
রাব্বুল আলামিন করে সবে মোনাজাত।”

সৈয়দ আলী আহসান ঈদের চিকন চাঁদের ফুটফুটে হাসিতে আগামি দিনের দীপ্তজ্জ্বোল ভবিষ্যত দেখতে পেয়েছেন । ঈদের দিনে আমরা যা করি,মেশেকের রেণু খোশবু আতরের ঘ্রাণে মাতোয়ারা করি চারদিক । নতুন জামা পড়ে আনন্দে উদ্ভাসিত হই । কবি তার ভাষায় এভাবেই চিত্রত করেন ।

“এসেছে নূতন দিন আলো শতদল পাপড়ি মেলেছে,
কুয়াশা হয়েছে ক্ষীণ ।
জরির জোব্বা,
শেরোয়ানী আর আমামার সজ্জায় আতরের পানি,
মেশেকর রেণু খোশবু বিলায়ে যায়—
বাতাসে বাতাসে কলরোল আজি,
ভেঙেছে তন্দ্রা ঘোর সাহেবজাদীর নেকাব টুটেছে,
রাত্রি হয়েছে ভোর।” (এসেছে নূতন দিন)

সবার ঘরেই ঈদের নতুন চাঁদ খুশি আনন্দের জোয়ার নিয়ে আসে না । আনন্দ বয়ে আনে না । গরীব-দুঃখী ও অসহায়দের সুখ আনন্দ থাকে মৌন । জরাজির্ন জীবনে ছন্নছাড়া অন্যহীনারা আকুল হয়ে থাকে সুখ আর আনন্দের প্রত্যাশায় । তাদের হ্বদয়ের নিরব আকুতি ফুটে ওঠেছে কবি তালিম হোসেনের ‘ঈদের ফরিয়াদ’ কবিতায় । কবির ভাষায়-

‘ঈদ মোবারক, সালাম বন্ধু,
আজি এই খোশরোজে দাওয়াত কবুল কর
মানুষের বেদনার মহাভোজে ।
কহিব কি আর,
চির-মানুষের ওগো বেদনার সাথী,
ঈদের এ দিন শেষ হয়ে আসে,
সমুখে ঘনায় রাতি।’

কবি সিকান্দার আবু জাফর ঈদ উপলক্ষে দোয়া চেয়ে পিতার কাছে লেখা ‘ঈদের চিঠি’-তে গরীবদের চিরাচরিত ঈদের চিত্র কি সুন্দর করে ফুটে ওঠে । তিনি লিখেছেন-

“ঈদের সালাম নিও,
দোয়া করো আগামী বছর কাটিয়ে উঠতে পারি যেনো
এই তিক্ত বছরের সমস্ত ব্যর্থতা ।
অন্ততঃ ঈদের দিন সাদাসিধে লুঙ্গি একখানি,
একটি পাঞ্জাবী আর সাদা গোলটুপি তোমাকে পাঠাতে যেনো পারি;
আর দিতে পারি পাঁচটি নগদ টাকা।”

ঈদ শুধু সুথ আনন্দের নামই নয় । ঈদ আমাদের কে শিক্ষা দেয় ভাতৃত্বের । সহমর্মিতার । অপরের প্রতি দায়িত্ববোদের । ঈদের মহান শিক্ষাই হচ্ছে ভেদাভেদ-হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে এক কাতারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয়া ।

এক আল্লাহর বান্দা হিসেবে ঈদের জামায়াতে দাঁড়িয়ে ভ্রাতৃত্ব ও সহমর্মিতার বাস্তব দৃষ্টান্ত স্থাপন করা । কিন্তু ধর্মীয় অনুশাসন না মানার কারণে সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ঈদ সচরাচর দেখা যায় না ।

আজ ঈদের দিনও দেখা যায় গ্রামের হতদরিদ্র কৃষকরা শীর্ণ গরুর পাল নিয়ে মাঠে যায় জমিতে লাঙল দিতে । কবি নজরুল তাদের কথাই বলেছেন তার “কৃষকের ঈদ” কবিতায় । কবি লিখেছেন ।

“জীবনে যাদের হররোজ রোজা
ক্ষুধায় আসেনা নিদ,
মুমূর্ষু সেই কৃষকের ঘরে
এসেছে কি আজ ঈদ ?
একটি বিন্দু দুধ নাহি পেয়ে
যে খোকা মরিল তার উঠেছে
ঈদের চাঁদ হয়ে কি সে শিশু-পুঁজরের হাড়?”

কবি তফাজ্জল হোসেন খান চমৎকার একটি গান লিখেছেন ঈদ নিয়ে । প্রতি বছর ঈদ এলেই সুর করে শিশুরা সমবেত কণ্ঠে গেয়ে ওঠে ।

“আজ আনন্দ প্রতি প্রাণে প্রাণে
দুলছে খুশীর নদী প্লাবনে ঘরে ঘরে
জনে জনে
আজি মুখর হব মোরা গানে গানে
ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক আজ
বল ঈদ মোবারক আজ।”

সুখ আনন্দের দিন ঈদ । কবি-সাহিত্যিকরা ও ঈদের দিনকে খুশীর দিন হিসেবে চিত্রিত করেছেন । তবে কবি মতিউর রহমান মল্লিক তার গানে ঈদের সুখ ঈদের আনন্দ অপূর্ণ থাকার কথা বলেছেন । যদি খোদার বিধান কায়েম না হয় অপূর্ণই থেকে যাবে ঈদের আনন্দ । কবি লিখেছেন

“ঈদের খুশী অপূর্ণ রয়ে যাবে ততদিন
খোদার হুকুমাত হবে না কায়েম কায়েম হবে না যতদিন।”

সত্যিই কবি অসাধারন সুন্দর করে যৌক্তিকতা কে ফুটিয়ে তুলেছেন তার গানে । পৃথিবীতে একমাত্র এক আল্লাহর হুকুমাত কায়েমের মাধ্যমেই ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করা সম্ভব । দূর করা সম্ভব উচ্চস্তর ও নিন্মস্তরের ভেদাভেদ ।

যে বৈষম্য দূর হলেই ঈদ হবে সত্যিকার আনন্দের দিন; ধনী গরীব শ্যামবর্ণ গৌরবর্ণ নির্বিশেষে সবাই নেচে ওঠবে ঈদের খুশিতে । সবার হৃদয়ে বুলিয়ে দেবে প্রেম প্রীতি ভ্রাতৃত্ব সৌহার্দ আর শান্তির পরশ ।

ঈদ থেকে শিক্ষা নিয়ে সারাবছর নিজের জীবনকে পরিচালিত করতে পারলেই সার্থক হবে ঈদ উৎসব । ঈদের দিন যেভাবে ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে দাঁড়িয়ে যায়, সারাবছর ধরে সেই বিভেদের দেয়ালকে ছাপিয়ে গড়ে তুলতে হবে ঐক্যের পাহাড় ।

তাহলেই ঈদের দিনে সুখানন্দে জেগে ওঠবে মন । নেচে ওঠবে অন্তর । থাকবে না ভেদাভেদ । প্রাণে প্রাণে বেজে ওঠবে সুখের বীন । সবাই মিলে গেয়ে ওঠবো কবি গোলাম মোস্তফার কণ্ঠে ।

“আজি সকল ধরা মাঝে বিরাট
মানবতা মূর্তি লভিয়াছে হর্ষে,
আজিকে প্রাণে প্রাণে যে ভাব জাগিয়েছে
রাখিতে হবে সারা বর্ষে,
এই ঈদ হোক আজি সফল ধন্য
নিখিল-মানবের মিলন জন্য,
শুভ যা জেগে থাক,
অশুভ দূরে যাক
খোদার শুভাশীষ স্পর্শে।”

শুভ হোক ঈদ উদযাপন । ছড়া কবিতায় ঈদানন্দে নেচে ওঠুক মন ।

লেখক: বার্তা সম্পাদক আওয়ার ইসলাম, শিক্ষক, জামিয়াতুস সালাম মাদরাসা মুগদা ঢাকা।
atamim05@gmail.com


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ