বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


আসছে হাসান ইনামের কিশোর উপন্যাস ‘গল্পটা আতিকের’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

যিয়াদ বিন সাঈদ: হাসান ইনাম। ভিন্ন ভিন্ন প্রসঙ্গে নানারকম পরিস্থিতিতে আমাদের কাছে আলোচিত এক নাম। সদ্য কৈশোর পেরুনো এ হাসান ইনাম এতদিন পর্যন্ত দুইটি মৌলিক গ্রন্থের জনক ছিলেন এবং দুটো বই নিয়েই তিনি পাঠকের মনে অদ্ভুত অভিনিবেশে তুলতে পেরেছিলেন আলোড়ন।

সুদীর্ঘ প্রচেষ্টা এবং প্রবল আত্মবিশ্বাস হতেই এ হাসান ইনামের হাতধরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ তে আসছে তার তৃতীয় সৃষ্টি কিশোর উপন্যাস ‘গল্পটা আতিকের’।

আর এ উপন্যাস খুব নীরবেই পাঠকের কাছে আস্তে আস্তে করে আসছে। একান্ত সন্তর্পণে অন্য দশজনের চাইতে একটু আলাদা হয়েই তিনি নির্মাণ করতে চাচ্ছেন সুরম্য এক প্রাসাদ। যেখানে কোনো বংশীবদন নেই। নেই কোনো ঢোল তবলার মাদকতা।

হাসান ইনামের ‘গল্পটা আতিকের’ নিয়ে কিছু বলা যাক। বইটি মূলত মানুষের জীবনে প্রচণ্ড আবেগের ক্ষেত্র কৈশোর কে কেন্দ্র করে। কৈশোরে মানুষের উদ্দীপ্ততা, সংগ্রামশীল চেতনা অথবা বৈপ্লবিক সুর কতটা ফলপ্রসূ তারই ঝকঝকে এক দৃষ্টান্ত হাসান ইনাম এখানে দিতে চেয়েছেন।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কর্ণধার, যারা আলোর মশাল হাতে নিয়ে ছুটে যাবে দিগ্বিদিক, গাইবে গান সাম্যের তারা অবক্ষয়ে ভরা এ সমাজব্যবস্থার কাছে কতটা নিপীড়িত তা বোঝা যাবে বর্তমান সময়ের শিক্ষাব্যবস্থার দিকে একটু তাকালেই। প্রশ্নপত্র ফাঁসের হিড়িক পড়ে গেছে চারিদিকে।

তীরহারা প্রশাসনের বেমালুম ভুলে যাওয়াই যেন আমাদের গোচর হচ্ছে আপাতমান কালে। ঠিক এমন পরিস্থিতির ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়েই হাসান ইনাম গল্পের সুরে সুরে দেখাতে চেয়েছেন আশ্রয়স্থল।

ছাত্রদের ভেতরে যখন জ্বেলে উঠবে তীব্র সংগ্রামের অপ্রতিরোধ্য জ্বলন, তখন তো নিশ্চিত এ সমাজ মাথা নুয়ে স্যালুটই করবে কেবল। প্রতিটি ছাত্র সচেতন এবং প্রতিটি অন্যায়ের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ হয়ে উঠবে যখন, তখন যতসব অবক্ষয়, আছে যত সংকট সব তাদের থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে। ভাবিত হৃদয়ে আমাদের চিন্তার উদ্রেক হয়, এ কীভাবে সম্ভব! কিন্তু না।

অসম্ভবকে সম্ভব করবার ক্ষমতা এদের আছে। এদের আছে অজেয়কে করতলগত করবার মত অসীম সংগ্রামশীল চেতনা। লেখক হাসান ইনাম ‘গল্পটা আতিকের’র ভেতর দিয়ে এমনই এক সূক্ষ্ম বার্তার মুখোমুখি করতে চেয়েছেন আমাদেরকে, আমাদের কৈশোর যাপিত এসব কচি ও কাঁচাদের।

হাসান ইনাম এখানে গল্পের ভঙ্গিমায় সত্যের বার্তা দিতে গিয়ে হয়তোবা মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ক্ষেত্র বানিয়েছেন। যদিও প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা অবাধ নকলকরণের দৃষ্টান্ত এমন পবিত্র আলয়ে খুবই বিরল কিন্তু এখানে মুখ্য বিষয় এটা না।

পাঠকের বোধগম্য হবার জন্যে এমন বিষয়টি উল্লেখ করতে ইচ্ছে করলো। হুজুগে এ সমাজ হয়তোবা এখানে প্রতিবাদের স্বর ব্যবহারে উদ্যত হবেন। বলার বিষয় যেটি, গল্পের পরিসরে ইতিবাচক দিক যেমনি থাকে, পাশাপাশি নেতিবাচক কিছু দিক রয়েই যায়।

হাসান ইনাম একজন মাদরাসা পড়ূয়া ছাত্র। নিশ্চিত তিনি এ আলয়ে, এ মহলে অভ্যস্ত। সে থেকেই তার গল্পের প্লট এ অঙ্গন জুড়েই হবে। এটাই স্বাভাবিক। পাশাপাশি আরও মুখ্য যেটি, হীনম্মন্যতা কে একদম পাশ কাটিয়ে লেখক হাসান ইনাম গল্পের প্রতিটি শব্দ বাক্যে পবিত্র শিক্ষা, উম্মতে মুহাম্মাদির জন্যে যে শিক্ষা সবচাইতে কল্যাণকর, তারই পরিচয়ে পরিচিত করে তুলতে চেয়েছেন বারেবার।

এটা খুব বিরলই যেন এখনের সময়ে। এ জন্যে তাকে অভিনন্দন জানানো একজন পাঠক হিসেবে আমার কর্তব্যই বলা চলে। সবশেষে বলি, হাসান ইনামের রচিত কিশোর উপন্যাস ‘গল্পটা আতিকের’ আমার ভালো লেগেছে। আমি এতে সজাগ করতে পেরেছি আমার মরে কাঠ হয়ে যাওয়া চেতনাকে।

উজ্জ্বল করতে চিয়েছি গল্পের আদলে পাওয়া শিক্ষার মাধ্যমে আমার সমস্তকে। পাঠকের কাছে নিবেদন, ‘গল্পটা আতিকের’ আপনার সংগ্রহে রাখতে চেষ্টা করুন। এবং হাসান ইনামের সর্ব ক্ষেত্রে সফলতার কামনা করে শেষ করছি।

বই: গল্পটা আতিকের। লেখক: হাসান ইনাম
প্রকাশক: জেব্রাক্রসিং প্রকাশন
প্রচ্ছদ: কাজী যুবাইর মাহমুদ

বইমেলার যে কোনো বই ঘরে বসে পেতে অর্ডার করুন রকমারিতে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ