বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫


৫ জেলার ঐতিহাসিক পাঁচ মসজিদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মাদ
আওয়ার ইসলাম

নেত্রকোনার ৮১৭ বছরের পুরনো  হারুলিয়া মসজিদ

৮১৭ বছরের পুরনো নেত্রকোনার হারুলিয়া মসজিদ

নেত্রকোনার ৮১৭ বছরের পুরনো নেত্রকোনার ‘হারুলিয়া মসজিদ’। মসজিদটি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফ্‌ফরপুর ইউনিয়নের হারুলিয়া গ্রামে অবস্থিত। মুঘল আমলে নির্মিত এ সুপ্রাচীন মসজিদটি ইসলামি ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক।

মুঘল আমলে নির্মিত মসজিদগুলো মধ্যে হারুলিয়া মসজিদও একটি। মসজিদটির সামনে রয়েছে সুবিশাল জালিয়ার হাওর। হাওর সংলগ্ন এ মসজিদটি মুঘল আমলের মানুষের ইবাদত-বন্দেগি ও ইসলামি ঐতিহ্যের স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করে রয়েছে।

মুঘলদের রাজত্বকালে ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির অত্যন্ত স্নেহধন্য শাইখ মুহাম্মদ ইয়ার নামে এক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ১২০০ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন।

নোয়াখালীর ২৭৬ বছরের পুরনো বজরা শাহী মসজিদ

নোয়াখালীর ২৭৬ বছরের পুরনো বজরা শাহী মসজিদ

মোঘল আমলের স্থাপত্য শিল্পের স্মৃতি বহনকারী ২৭৬ বছরের পুরনো নোয়াখালীর ১৫ কিলোমিটার অদূরে অবস্থিত বজরা শাহী মসজিদ। দিল্লি শাহী মসজিদের আদলে নির্মিত এ মসজিদটি ১১৫৪ হিজরি, ১১৩৯ বাংলা মোতাবেক ১৭৪১ ইংরেজি সালে মোগল সম্রাট মুহাম্মদ শাহের আমলে জমিদার আমান উল্লাহ’র তদারকিতে নির্মাণ করা হয়।  স্থাপত্য শিল্পের সুপ্রাচীন নির্দশন বহনকারী মসজিদটি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার বজরা গ্রামে অবস্থিত।

মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহের বিশেষ অনুরোধে পবিত্র মক্কা শরীফের অধিবাসী তৎকালীন অন্যতম বুজুর্গ আলেম হযরত শাহ আবু সিদ্দীক এ ঐতিহাসিক মসজিদের প্রথম ইমাম হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তাঁর বংশধরগণ যোগ্যতা অনুসারে আজও প্রাচীন এ মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমান ইমাম হাসান সিদ্দিক প্রথম ইমাম শাহ আবু সিদ্দিকের সপ্তম পুরুষ।

বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ নোয়াখালীর এ ঐতিহাসিক মসজিদটির ঐতিহ্য রক্ষার্থে এবং দুর্লভ নিদর্শন সংরক্ষণের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।

দিনাজপুরের ২২৪ বছরের পুরনো  নয়াবাদ মসজিদ

২২৪ বছরের পুরনো দিনাজপুরের নয়াবাদ মসজিদ

নয়াবাদ মসজিদ রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার নয়াবাদ গ্রামে অবস্থিত। ২২৪ বছরের পুরনো মসজিদ নয়াবাদ মসজিদ। দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার এবং চেহেলগাজীর মাজার থেকে ২.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। নয়াবাদ গ্রামে এ মসজিদটি বিচিত্র মসজিদ নামে পরিচিত।

১.১৫ বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত মসজিদটির প্রধান দরজার ওপর স্থাপিত ফলকের তথ্য মতে জানা যায় যে, সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম-এর রাজত্ব কালে ২ জ্যৈষ্ঠ ১২০০ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১৭৯৩ সালে নির্মাণ করা হয়।

কথিত আছে যে, ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কান্তনগর মন্দির তৈরির কাজে পশ্চিমের কোনো দেশ থেকে আগত মুসলমান স্থপতি ও কর্মীরা এ গ্রামে বসবাস শুরু করেন এবং তাদের নিজেদের নামাজ পড়ার জন্য এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৩৮ বছর প্রাচীন মুসলিম নিদর্শন দারাসবাড়ি মসজিদ

৫৩৮ বছরের প্রাচীন মুসলিম নিদর্শন দারাসবাড়ি মসজিদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার ছোট সোনা মসজিদ ও কোতয়ালী দরজার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ওমরপুরে দারাসবাড়ি মসজিদ। এ মসজিদটি বাংলার প্রথম যুগের মুসলিম স্থাপত্য কীর্তির একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। স্থানীয় জনসাধারণ এই স্থানকে দারসবাড়ি বলে থাকেন।

মসজিদটির অবস্থান ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়। সোনা মসজিদ স্থল বন্দর থেকে মহানন্দা নদীর পাড় ঘেঁষে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ রাইফেলস-এর সীমান্ত তল্লাশী ঘাঁটি। ঘাঁটি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ‍দূরে ঘোষপুর মৌজায় প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের সুন্দর নিদর্শন দারাসবাড়ি মসজিদ। বর্তমানে জনশূন্য দারাসবাড়ি মসজিদটি ১৪৭৯ খ্রিস্টাব্দে সুলতান শামস উদ্দীন ইউসুফ শাহের আমলে নির্মিত হয়।

প্রথম দিকে এ মসজিদের নাম দারাসবাড়ি ছিল না। আগে এ মসজিদের নাম ছিল ফিরোজপুর মসজিদ। ১৫০২ সালে সুলতান হোসেন শাহ কর্তৃক দারাসবাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ফিরোজপুর জামে মসজিদটি দারাসবাড়ি মসজিদ হিসেবে পরিচিত লাভ করে।

টাঙ্গাইলের ৪০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহাসিক আতিয়া মসজিদ

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লৌহজং নদীর পূর্বপাড়ে আতিয়া গ্রামে প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন ইসলামি স্থাপনা আতিয়া মসজিদ।

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লৌহজং নদীর পূর্বপাড়ে আতিয়া গ্রামে প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন ইসলামি স্থাপনা আতিয়া মসজিদ।

বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন এ আতিয়া মসজিদটি। ১৬০৮ থেকে ১৬১১ সালের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে এ মসজিদটি সাঈদ খান পন্নী নির্মাণ করেন।

মসজিদটি নির্মাণের পর ১৮৩৭ সালে রওশন খাতুন চৌধুরানী এবং ১৯০৯ সালে আবুল আহমেদ খান গজনবি এ মসজিদটি সংস্কার করেন।  মসজিদটি নির্মাণের পর ১৮৩৭ সালে রওশন খাতুন চৌধুরানী এবং ১৯০৯ সালে আবুল আহমেদ খান গজনবি এ মসজিদটি সংস্কার করেন।

এক গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকৃতির মসজিদটির সামনের দিকে বারান্দার ওপর অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। তথ্যসূত্র : ইন্টানেট/আরএম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ