বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


মুফতি তাকি উসমানি ও রাফি উসমানি ওয়াজের কি বিনিময় নেন?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ আবদুল বাছিত: রেজওয়ান আমাদের সঙ্গে পড়ে। আগামি শুক্রবার রেজওয়ানের বাবার মাদরাসায় ওয়াজ। এতে হুজুরকেও দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।

হুজুর ছাত্রদের হাজিরা নেওয়ার পর রেজওয়ানকে বললেন। তোমাকে শুক্রবারে আমার উপস্থিতিতে ওয়াজ করতে হবে। না হয় শনিবার থেকে আমার ক্লাসে বসতে পারবে না। সে বলল ইনশাআল্লাহ।

সুযোগে মারজান ভাই প্রশ্ন করলো, হুজুর আমরা কি ওয়াজ করতে পারবো?

হুজুর বর্তমান বিশ্বের প্রভাবশালী ইসলামি স্কলার তাকি উসমানি ও তার বড় সহোদর রাফি উসমানির কথা উল্লেখ্য করলেন। বললেন, আমি ইফতা শেষ করে এক বছর তাকি উসমানি’র সান্নিধ্যে ছিলাম। তিনি ফতোয়া লিখতেন। আর আমি তার হাওলা (সূত্র) বের করতাম।

তাদের মুরব্বি ডা. আবদুল হাই রহ. তাদের ওয়াজ করতে নিষেধ করছিলেন। তখন রাফি উসমানি খুব ভালো ওয়াজ করতে পারতেন। এখন তাকি উসমানি ভালো ওয়াজ করতে পারেন। তখন অনেকে রাফি উসমানির কাছে ওয়াজের আবদার করতো। তিনি যেতেন না।

একবার ডা. সাহেবের এক খলিফা তাকে ওয়াজের দাওয়াত করেন। তিনি বলেন, ডা. সাহেব থেকে অনুমতি লাগবে। ডা. সাহেব রাফি উসমানিকে অনুমতি দিলেন। পরে এক সময় তাদের শুধু শুক্রবারে জুম্মার খতিব হিসাবে ওয়াজের অনুমতি দেওয়া হয়।

এভাবে একবার তাকি উসমানী বাইরে সফরের অনুমতি পান। ভ্রমণের সময় নিকটবর্তী হলে সফরে ওয়াজের অনুমতি নিয়ে যান। অবশেষে ডা. আবদুল হাই রহ. মৃত্যুর দশদিন আগে উভয় সহোদরকে ডেকে নিয়ে ওয়াজের অনুমতি ও খেলাফতি দিয়ে দেন।

অথচ ওই সময়ে তাকি উসমানি অভিজ্ঞ মুহাদ্দিস, মুফাসসির, পাকিস্তানের প্রধান জাস্টিস ছিলেন। কিন্তু এত যোগ্য থাকার পরেও তারা ওয়াজের অনুমতি পাননি। তারা মাদরাসার ফান্ড থেকে কোন হাদিয়া নেন না। শুধু আসা-যাওয়ার খরচ নেন। কিন্তু কেউ ব্যক্তিগতভাবে তাদের হাদিয়া দিলে নিতেন।

হুজুর হাদিয়ার ব্যাপারে বলেন, আমি স্বচক্ষে দেখেছি দরগাহ মসজিদের ইমাম আকবর আলি রহ. নিজের পক্ষ থেকে রাফি উসমানিকে হাদিয়া দিয়েছিলেন। গ্রহণের পূর্বে জিজ্ঞেস করছিলেন, ভাই হাদিয়া কার পক্ষ থেকে?

তিনি বলেছিলেন আমার পক্ষ থেকে। এটা ছিলো আমাদের আকাবিরের স্বভাব।

কিন্তু বর্তমান কিছু ওয়াজির উদ্দেশ্য থাকে পকেট গরম করা। ওয়াজ করে যদি কিছু পাওয়া যায়। এটা থাকে তাদের মূল্য উদ্দেশ্য। হাদিসে এদের জিব্বাহ কাটা হবে, এদের সর্বোচ্চ পরিণাম শাস্তি দেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

হুজুর নিজের কথা উল্লেখ করে বলেন। আমাকেও ওয়াজের অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবশ্য এখন দেওয়া হয়েছে।
রেজওয়ান বলল, হুজুর আমাকেও অনুমতি দেওয়া হয়নি।

তখন হুজুর বললেন, যাও তাহলে শুক্রবারের জন্য আমি অনুমতি দিয়ে দিলাম। ওয়াজের বিষয়ও কি নির্ধারিত করে দেব?

জি দিয়ে দেন হুজুর।
তুমি জবানের হেফাযত সম্পর্কে ওয়াজ করবে। মনে রাখবে, যদি ওয়াজে উপস্থিত না থাকো। তাহলে আমার দরসে বসতে পারবে না।

(আতাউর রাহমান পাকিস্তানি হুজুরের দরস থেকে- সিনিয়র মুহাদ্দিস জামেয়া কাসিমুল উলুম শাহ জালাল রহ. দরগাহ মাদরাসা সিলেট।)

দরকারি অ্যাপটি ইনস্টল করতে ক্লিক করুন 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ