শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

‘সাংস্কৃতিক জোট জনবিচ্ছিন্ন; তারা জনগণের ভাষা বোঝে না, কথা বলে প্রভুদের ভাষায়'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম ও মিডিয়ায় পরিচিত মুখ মুফতি ফয়জুল্লাহ। ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব। সম্প্রতি বিভিন্ন টিভি টকশোতে তিনি দেশের আহলে হক উলামায়ে কেরামের মুখপাত্রের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সরব থাকেন সব জাতীয় ইস্যুতে।

৩ মে শনিবার রাজধানী ঢাকায় ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ ও ‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট’ এর ব্যানারে পৃথক দুটি সমাবেশে কওমি মাদরাসা, হেফাজতে ইসলাম, উলামা কেরাম ও গ্রিক মূর্তির ব্যাপারে ধর্মপ্রাণ মানুষের অবস্থান নিয়ে বিষদগার করা হয়। প্রশ্ন তোলা হয় ইসলাম ও মুসলমানের নানা বিষয়ে। এসব নিয়েই আওয়ার ইসলাম মুখোমুখি হয় এ চিন্তাশীল আলেমের। তার সঙ্গে কথা বলেন, আতাউর রহমান খসরু

আওয়ার ইসলাম : গতকাল ঢাকায় দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে হেফাজতে ইসলামসহ দেশে ইসলামপন্থীদের উত্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে আপনার মূল্যায়ন কী?

মুফতি ফয়জুল্লাহ : নাস্তিক মুরতাদদের বন্ধু হলো শয়তান। বাংলাদেশের মুষ্ঠিময় কিছু মানুষ যাদের পার্শ্ববর্তী একটি দেশ লালন পালন করে। তারা সংস্কৃতির লেবাসে অপসাংস্কৃতির আগ্রাসনের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর পথে বিমুখ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এটা শয়তানের সনাতন পদ্ধতি। তাদের ব্যাপারে নতুন কিছু বলার নেই।

আওয়ার ইসলাম : তারা তো নিজেদের শুভ শক্তি হিসেবেই দাবি করেন। তারা মনে করেন, তারা যা করছে দেশের কল্যাণেই করছে!

মুফতি ফয়জুল্লাহ : আসলে তারা সংস্কৃতির মুখোশে অপসংস্কৃতির চর্চা করে মানুষ পরিশুদ্ধির প্রক্রিয়া চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে।

এ জঘণ্য পাপী ও জাহান্নামের কীটদের পক্ষ থেকে উপর হামলা এসেছে বার বার। তাদের কারণে আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির মাধ্যমগুলো বিপর্যস্ত। তারা বিভিন্ন নামে, যাত্রার নামে, সিনেমার নামে মানুষের চিন্তা চেতনাকে অসুস্থ করে তুলছে। ফলে দেশে বাড়ছে নেশা, বিশৃংখলা, উলঙ্গপনা ও অশ্লীলতা। এগুলো এদেরই কীর্তি। তাদের কারণে পাড়া মহল্লার বখাটে ছেলে ধর্ষণে উৎসাহ পাচ্ছে এবং সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ নিচে নেমে যাচ্ছে।

আওয়ার ইসলাম : ধর্মীয় কোনো ইস্যুতে মানুষ রাজপথে নেমে আসলে তারা দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে সামনে এনে দাঁড় করায়।এটা কেনো?

মুফতি ফয়জুল্লাহ : আমি মনে করি, এরা শুধু ইসলামের শত্রু নয়। এরা আমাদের দেশ, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের শত্রু। দেশীয় কৃষ্টি-কালচার ও দেশীয় সংস্কৃতির দুশমন। এসব মুখোশধারী সংস্কৃতি কর্মীরা আবহমানকাল থেকে আমাদের দেশে চলে আসা সংস্কৃতির মূলোৎপাটন ঘটিয়ে পার্শ্ববর্তী  একটি দেশের সংস্কৃতির আমদানি করে দু’দশের সংস্কৃতিকে একাকার করে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হানছে।

যখন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক ধর্মপ্রাণ মানুষ, দেশের আলেম উলামা তাদের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানায় তখন তারা অনেক আজগুবি গল্পের অবতারণা করে।

তারা তাদের চিরচেনা বুলি যা তাদেরকে শেখানো হয়েছে, পড়ানো হয়েছে তা আওড়াতে থাকে। যেমন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মৌলবাদ ইত্যাদি বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর আঘাত হানে।

আওয়ার ইসলাম : সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সরকার হেফাজতকে পুষছে। আপনি কী বলবেন?

মুফতি ফয়জুল্লাহ : আমি মনে করি, ইসলামি শক্তি কোনো দিন কারো উপর নির্ভর করে নি এবং আগামীতেও কারো উপর নির্ভর করবে না। এরা শুধু আল্লাহর কাছে মাথানত করে এবং আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করে।

আমরা জানি, ইসলামের পথ অনেক কণ্টকাকীর্ণ। কষ্ট করেই ইসলামের পথ পাড়ি দিতে হবে।

তারা সরকারের ঘণিষ্ঠজন। সরকারের আপনজন। তারা সরকারকে বিভ্রান্ত করে দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে দেশের মানুষ তার বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাদের এ ষড়যন্ত্র কোনোদিন বাস্তবায়িত হবে না।

আওয়ার ইসলাম : ৫ মের ব্যাপারে বার বার অভিযোগ করা হয়, তা সরকার পতনের জন্য ছিলো। গতকালও এমন দাবি করা হয়েছে। মানুষ কেনো সেদিন সমবেত হয়েছিলো?

মুফতি ফয়জুল্লাহ : এগুলো বিকারগ্রস্থ মানুষের অসুস্থ কথা। হেফাজত তথা বাংলাদেশের মানুষ সেদিন সরকার পতনের জন্য আন্দোলন করে নি। নাস্তিক মুরতাদদের আস্ফালন, তাদের দেশ বিরোধী ও ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একত্র হয়েছিলো

প্রয়োজন হলে নাস্তিক মুরতাদদের আস্ফালন বন্ধ করতে ও তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বার বার একত্র হবে বাংলাদেশের মানুষ ঢাকামুখী হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে।

আওয়ার ইসলাম : তারা সরকারকে বোঝাতে চাচ্ছে, ভোট পাওয়ার জন্য সরকারের হেফাজতসহ ধর্মীয় দলগুলোর দাবি মেনে নিলেও তাতে সরকারের কোনো উপকার হবে না। আপনি কী মনে করেন, ভোটের রাজনীতিতে এর কোনো প্রভাব পড়বে?

মুফতি ফয়জুল্লাহ : প্রথমে একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চাই, পাঠ্যপুস্তকের সংশোধন, মূর্ত অপসারণসহ যে বিষয়গুলো ধর্মীয় দলগুলোর বলে দাবি করা হচ্ছে তা মূলত এ দেশের আপামর জনসাধারণের দাবি। কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় দলের দাবি নয়।

হেফাজত নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে হিজাব পরিয়ে ছাড়বে

আমি মনে করি, সরকার যদি দেশের মানুষের দাবি দাওয়া সামনে রেখে কাজ করলে, সরকারের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হবে।

আওয়ার ইসলাম : তাদের এই প্রতিবাদ সভা ও সেমিনারে আপনি বা আপনারা কতোটা বিচলিত? সরকারের মনোভব পরিবর্তনে তা কতোটা প্রভাব ফেলবে বলে আপনি মনে করেন?

মুফতি ফয়জুল্লাহ : আমরা তাদের এসব অপতৎপরতায় মোটেও বিচলিত নই। এরা খুবই জনবিচ্ছিন্ন। এদের সাথে বাংলাদেশের মানুষের  কোনো সম্পর্ক নেই। এরা  দেশের মানুষের ভাষা বোঝে না, তাদের ভাষায় কথা বলে না। তারা কথা বলে প্রভুদের ভাষায় এবং তাদের অবস্থান বাংলাদেশে ও বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে।

আমার মনে হয়, তারা কি বললো তার দিকে সরকারের কর্ণপাত করার প্রয়োজন নেই। সরকার জনগণের দাবি ও প্রত্যাশা পূরণ করলে উপকৃত হবে এবং তাই করা উচিৎ। অসুস্থ ও বিকারগ্রস্থ মানুষ সব সময় সমাজে  থাকে তাদের কথায় গুরুত্ব দিলে সমাজ বিপদগ্রস্থ হয়।

হেফাজতের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে: সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সমাবেশে লোক নেই; বক্তারা নিজেরাই ক্ষুব্ধ

দেবী থেমিসের মূর্তি না সরালে, আমরাই আন্দোলনে নামতাম: চারুকলা ইনস্টিটিউটের ডীন

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ