বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ইসির নতুন নির্দেশনা ইরান সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম: চীন বান্দরবানে দুর্গম পাহাড়ে অভিযানে কুকি-চিনের ৯ সদস্য গ্রেফতার আজমিরীগঞ্জে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কমিটি গঠন উদীচীর কর্মকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিব্রত: ডিএমপি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিজ্ঞাপন নীতিমালা শিগগিরই বাস্তবায়ন : তথ্য প্রতিমন্ত্রী ইরানের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহায়তা করা নিয়ে যা বলছে সৌদি মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে যোগদান করলেন মুফতি মকবুল হোসাইন কাসেমী খুলনায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন নেতার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার

‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো মসজিদ আকৃতির, এটাই তাদের হিংসার কারণ’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কবি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুহিব খান। যিনি একই সঙ্গে বহুমুখী প্রতিভার এধিকারী। নিজে গান লেখেন এবং গান গেয়ে জয় করেছেন অসংখ্য শ্রোতার মন। প্রকাশ পেয়েছে তিনটি কবিতার বই। আল কুরআনের পূর্ণাঙ্গ কাব্যানুবাদও করেছেন তিনি। সম্পাদনা করেছেন এক সময়ের জনপ্রিয় সাপ্তাহিক লিখনী। ‘ন্যাশনাল মুভমেন্ট’ নামে গড়ে তুলেছেন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্লাটফরম। গ্রিক দেবির মূর্তি সরাতে তার একটি কবিতা বেশ সাড়া ফেলে।

ভাস্কর মৃণাল হকের তৈরি সাম্প্রতিক গ্রিক দেবির ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনা সমালোচনা তুঙ্গে, সমালোচনা আছে এর শিল্পমান ও সার্বজনীনতা নিয়েও। এ প্রসঙ্গে কবি মুহিব খান বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন আওয়ার ইসলামের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রোকন রাইয়ান

থেমিসের ভাস্কর্য বা মূর্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, থেমিস মূর্তি একটি ধর্ম ও বিশ্বাসের অংশ। গ্রীক ধর্মের কাহিনীতে যার কথা উল্লেখ আছে। গ্রীক ধর্মের একটি বিশেষ অংশ ও প্রতীককে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্থাপন করা সাম্প্রদায়িকতার নামান্তর। যেখানে বাংলাদেশকে ধর্মনিরেপেক্ষ বলা হয়।

বাংলাদেশের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান বা বাংলাদেশের চেহারা হিসেবে দেখা হয়, বাংলাদেশের আইন ও আদালত, রাস্ট্রপ্রধানের বাসভবন ও শিক্ষার মূল কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো যখন স্থাপন করা হয় তখন এগুলোর মূল আইকনকে মসজিদের আদলে করা হয়। যাতে বোঝা যায় এটা মুসলমানের এলাকা, মুসলমানের দেশ। এখন এইগুলো ইসলামবিরোধী শক্তির ভাল লাগছে না। কিন্তু এখন যেহেতু মসজিদ-গম্বুজ ভাঙ্গার সুযোগ নেই তাই একটা মূর্তি বসিয়ে দিয়েছে যাতে মুসলিম দেশের যে পরিচয় আছে সেটা ম্লান হয়ে যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছিল ঢাকা মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, কুরআনের প্রতিকৃতি ছিল লগোতে। দেখতে মসজিদের মতই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এখন সেগুলো নেই, ষড়যন্ত্রকারীরা মুছে দিয়েছে। এরকমই একটি ষড়যন্ত্র হচ্ছে সুপ্রিমকোর্টের সামনে থেমিসের মূর্তি স্থাপন।

মৃনাল হক একজন স্বীকৃত ভাস্কর বটে। একজন শিল্পি যখন তার হৃদয় থেকে, মন থেকে, আগ্রহ রুচিবোধ থেকে কোন শিল্পকর্ম করেন তখন তার শিল্পমান অক্ষুন্ন থাকে। কিন্তু গ্রিক শিল্পটি মৃণাল হকের অন্যান্য শিল্পকর্মের সাথে কোন মিল নেই কারণ এটা তার নিজের করা শিল্প নয় অর্ডারি কাজ। আর একজন শিল্পী অর্ডারি কাজ করতে পারে না। আমি যদি কোন অর্ডার নিয়ে কবিতা লিখি মনে হবে না যে এটা মুহিব খানের কবিতা। শিল্পী সে নিজের হৃদয় থেকে কাজ করে কিন্তু মৃণাল হক সেটা করেনি। ফরমায়েশি কাজ করেছে। তার অন্যান্য শিপ্লকর্ম বক চত্বর, রাজসিক এগুলোর সঙ্গে মিল নেই।

আদালত চত্তর থেকে মূর্তি সরিয়ে পুনঃরায় বসানো নিয়ে মুহিব খান বলেন, সরকার তো সব ধরনের লোককে খুশি করতে চায়। সবদিক ঠিক রাখতে চায়। এখানে হেফাজতকে টানতে হয়। ২০১৩ সালে হেফাজতের উপর নির্যাতন করেছিল সরকার। সরকার দেখেছে বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম ও তাদের অনুসারী সব ধরনের নাগরিক সরকারের উপর ক্ষুব্ধ।আর সরকার সুষ্ঠভাবে নির্বাচন করলে পরাজয় নিশ্চিত। অতীতে ৫ সিটি নির্বাচনে যেমনটি হয়েছে। তাই ইসলামপন্থীদের খুশি করতেই সরকার মূর্তি সরানোর দাবিকে খুব সহজেই মেনে নিয়েছে।

আবার বামদের খুশি রাখার জন্যে পুনঃরায় স্থাপন করা হয়েছে। দু পক্ষকেই খুশি রাখতে চাচ্ছে সরকার। তারা যদিও সংখ্যায় কম কিন্তু মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক ময়দান তাদের দখলে। আর মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার হারাতে চায় না। তাই তাদের খুশি করার জন্যে সরকার পুনঃরায় এনেক্স ভবনের সামনে গ্রিক দেবিকে স্থাপন করেছে। কিন্তু এর ফলে সরকার দুদিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মূর্তি সরিয়ে আবার স্থাপন করায় ইসলাম্পন্থীরা আরো বেশি ক্ষেপেছে। তারা বলছে রমজান মাসে আমাদের সাথে ইয়ার্কি করল সরকার!
আর বামপন্থীরা বলছে, সরকার মূর্তি সরিয়ে আবার অন্য জায়গায় স্থাপন করেছে এটা আমাদের পরাজয়।

সুতরাং এই কাজ হিতে বিপরীত হয়েছে। দুই পক্ষই এখন উত্তেজিত। এর আগে কিন্তু বামপন্থীরা বলেনি এখানে একটা মূর্তি  স্থাপন করা হোক। কিন্তু স্থাপনের পর বিষয়টা ঝামেলা পাকিয়েছে।

বামপন্থীরা দাবি করছে আলেমরা সব মূর্তি ভাঙতে বলবে, আসলেই এটা কি সঠিক না এই কথার পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে? এ প্রশ্নে মুহিব খান বলেন, একটা কথা ইসলামের দৃষ্টিতে সব ধরনের মূর্তি নিষিদ্ধ। পুজা করা হোক আর নাই করা হোক সব ধরনের মুর্তি ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম। কিন্তু আলেমরা কি সব মূর্তি সরাতে বলেছে? আলেমরা কোনটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে যেটা বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ও মুসলমানের চেতনায় আঘাত করে। ইতোপূর্বে এয়ারপোর্টের সামনে লালনের মূর্তি নিয়ে আন্দোলন করেছিল আলেমরা। কারণ এয়ারপোর্ট বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেখান দিয়ে মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করে, দেশকে আইডেন্টিফাই করার মত জায়গা এটা। যেখানে হাজী ক্যাম্প অবস্থিত তাই ওলামায়েকরাম লালনের মূর্তি নিয়ে আন্দোলন করেছিল।

হ্যাঁ আজকে যদি গুরুত্বপূর্ণ নয় বা আন্দোলন করার মত নয় এমন স্থানে মূর্তিটা হতো তাহলে হয়তো আন্দোলনই হতো না। কিন্তু এমন স্পর্ষকাতর স্থানে সার্বজনীন বিশ্বাসের জায়গায় সাম্প্রদায়িক ভাস্কর্য এবং অশালীন নগ্ন মূর্তি  হয় তবে আন্দোলন করতে বাধ্য হবে।

কওমি মাদরাসা নিয়ে মুন্নী সাহার অপসাংবাদিকতা -মুহিব খান

কওমি মাদরাসার জন্য আলাদা সঙ্গীত লিখলেন মুহিব খান


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ