মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


কাতার থেকে ফিরতে হচ্ছে কয়েক হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: কাতার থেকে কয়েক হাজার ‘অবৈধ’ কর্মীকে বাংলাদেশে ফিরতে হবে৷ কিছুদিন আগে অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশিদের তিন মাসের ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেছে কাতার কর্তৃপক্ষ৷ আর তারমধ্যেই সরকারের অনুমতি নিয়ে সেদেশ ছাড়ার সুযোগ থাকছে অবৈধদের৷

Katar Doha Baustelle Arbeiter OVERLAYFÄHIG (Getty Images)

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের খুব বেশি শ্রমিক অবৈধভাবে কাতারে অবস্থান করেন না৷ এই সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ হাজার হতে পারে৷ তাছাড়া বৈধভাবে বর্তমানে প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক বৈধভাবে কাতারে যাচ্ছেন৷ আর বৈধভাবেই সেদেশে অবস্থান করছেন ৩ লাখেরও বেশি শ্রমিক৷ ফলে অবৈধরা ফিরে এলেও সেখানকার শ্রম বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না৷ তবে সরকারের উচিত যদি কোনো সুযোগ থাকে তাদের সেখানে বৈধ করার তাহলে সেটা করতে হবে৷ কারণ তারা সেখানে আইন শৃঙ্খলা ও ভাষাসহ সবকিছুতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা৷

বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তারা এখনো আমাদের অফিসিয়ালি কিছু জানায়নি৷ জানালে আমরা বিষয়টি ভেবে দেখব৷'' কিছু শ্রমিক ফিরে এলেও শ্রম বাজারে কোন প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করেন তিনি৷

কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ টেলিফোনে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কাতার সরকার অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশিদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা দিয়ে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সেদেশ ত্যাগ করতে বলেছে৷ এ সময়ের মধ্যে অবৈধভাবে অবস্থান করা বিদেশিরা কাতার ছেড়ে গেলে কোনো জরিমানা দেওয়া লাগবে না, এবং তারা পুনরায় কাতারে প্রবেশ করতে পারবেন৷ কিন্তু সাধারণ ক্ষমার মেয়াদের মধ্যে দেশত্যাগ না করলে, তাদের বিরুদ্ধে জেল ও জরিমানা শাস্তি হতে পারে৷''

তিনি বলেন, ‘‘এপর্যন্ত প্রায় দু'শ বাংলাদেশি সাধারণ ক্ষমার আওতায় কাতার ত্যাগ করেছেন৷ আরও এক হাজার তিনশ' জনকে আমরা ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করেছি, যাতে করে তারা নির্বিঘ্নে কাতার ত্যাগ করতে পারেন৷ অন্যান্য দেশগুলোর অবৈধ অবস্থানকারীরাও কাতার ত্যাগ করছে৷''

জানা গেছে, সাধারণ ক্ষমায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অবৈধদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে৷ কাতার সরকারের পক্ষ থেকে এটি দ্বিতীয়বারের মতো ‘সাধারণ ক্ষমা' ঘোষণা করা হলো৷ যেসব বিদেশি আইন অমাণ্য করে কাতারে অবস্থান করছেন, তারা কোনো ধরনের আইনি জটিলতা ছাড়া দেশত্যাগ করতে পারবেন৷ অবৈধ অভিবাসীরা কাতারের সিআইডি ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশে যাওয়ার ‘এক্সিট পারমিট' নেয়ার সুযোগ পাবেন৷

প্রসঙ্গত, সৌদিআরব, লেবানন ও জর্ডানের শ্রমবাজার খুলে যাওয়ায় কাতারও বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে৷ তাদের ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণে বিপুলসংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন হচ্ছে৷ তাই অন্যান্য দেশ থেকে কর্মী নিয়োগের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও তারা দুই থেকে আড়াই লাখ কর্মী নিতে পারে৷ চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি কাতার সফরকালে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন খলিফা আল থানি ও প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী ড. ঈসা সাদ আলজাফালি আল নুয়াইমির কাছ থেকে এই আশ্বাস পেয়েছেন৷

এদিকে, অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা রিফিউজি এন্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্স ইউনিট (রামরু)'র সমন্বয়কারী অধ্যাপক সি আর আবরার ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘অল্প কিছু শ্রমিক ফিরে এলেও শ্রমবাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না৷ তবে যারা ওখানে কাজ করে তারা ওখানকার আইন শৃঙ্খলা ও ভাষা সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছে৷ ফলে তাদের যদি বৈধ করার সুযোগ দেয়া যায় তাহলে খুব ভালো হয়৷''

তিনি বলেন, পাশাপাশি তারা কিভাবে অবৈধ হলো সেটাও খতিয়ে দেখবে হবে৷ যদি তারা বৈধভাবে সেখানে গিয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে অবৈধ হয় তাহলে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে সরকারকে৷ এবং তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে হবে৷''

সূত্র: ডয়চে ভেলে

এফএফ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ