শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


উসূলে হাশতেগানা মানলে সরকারি সনদের প্রশ্ন আসে কেন? -দেওবন্দের মুফতিয়ে আজম হাবিবুর রহমান খায়রাবাদি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

mufti-khairabadiআওয়ার ইসলাম: মুফতিয়ে আজম হাবিবুর রহমান খায়রাবাদি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রধান মুফতি৷ হযরত প্রায় ৩০ বছর ধরে বারবার বাংলাদেশ সফর করেছেন৷ বাংলাদেশের সরকার, শিক্ষাব্যবস্থা, কওমি মাদরাসা, উলামায়ে কেরাম সব বিষয়েই হযরতের যথেষ্ট ধারণা্ রয়েছে৷ তার সাথে আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বাংলাদেশে কওমি সনদের স্বীকৃতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়৷ স্বীকৃতি প্রশ্নে আমাদের শ্রদ্ধাভাজন উলামাদের মধ্যকার এখতেলাফের বিষয়টিও উঠে আসে৷

লিখেছেন ভারতের দেওবন্দ থেকে হাওলাদার জহিরুল ইসলাম। পরিকল্পনা ও সম্পাদনা, সাইফুল ইসলাম রিয়াদ

হযরত বলেন, তোমাদের দেশের উলামাদের মাঝে তুলনামূলক এখতেলাফ বেশি৷ দ্বীনি এখতেলাফের চেয়ে রাজনৈতিক এখতেলাফ বেশি৷ যা আমাদের হিন্দুস্তানে নেই৷ আমাদের এখানে শিয়া-সুন্নি, মাযহাবি-লা মাযহাবি, দেওবন্দী-বেরেলভী-মওদূদিয়াত এদের মাঝে স্পষ্ট এখতেলাফ রয়েছে এবং এটা দ্বীনি এখতেলাফ৷ কিন্তু ইসলাম ও মুসলমানের যে কোনো বিপদে সবাই এক কাতারে দাঁড়াতে পারে৷’

হজরত উদাহরণ হিসেবে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে চলামান 'তিন তালাক বাতিল' সংক্রান্ত মামলাটির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এ মামলাটির রায় যাতে মুসলমানদের পক্ষে হয় সে জন্য এ দেশের সব দলের মুসলিম নেতারা আজ ঐক্যবদ্ধ৷ তোমাদের দেশের অবস্থা কিছুটা ভিন্ন৷’

হাবিবুর রহমান খায়রাবাদি বলেন, বাংলাদেশের কওমি উলামা ও মাদারেসের প্রতি খুব একটা আন্তরিক বলে মনে হয় না ৷ তবে সরকারের মনোভাব যদি পরিবর্তন হয়ে থাকে তাহলে ভিন্ন কথা৷ সবচে' বড় কথা হলো তোমাদের আম-খাস সবার মাঝেই দারুল উলুম ও উলামায়ে দেওবন্দকে অনুসরণ করার জজবা আছে৷ তাই দারুল উলুম যে নীতি ও আদর্শের ওপর চলছে বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাগুলোকেও সে নীতি আদর্শ মেনে চলা উচিত৷ 'উসূলে হাশতেগানা' মানলে তো সরকারি সনদের প্রশ্নই আসে না৷ উলামাদের উচিত উসূলে হাশতেগানা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করা৷

তিনি বলেন, সরকার যদি স্বীকৃতি দিতে চায় আর কওমি আলেমগণ তা গ্রহণ করতে চান তাহলে সর্বপ্রথম উলামাদের মাঝে এত্তেহাদ(ঐক্য) হওয়া জরুরী৷ এর পর সনদের বিষয়ে উলামাদের মাঝে বিস্তারিত আলোচনা-পর্যালোচনা, গবেষণা হওয়াটাও জরুরী৷ এ ব্যাপারে দারুল উলুমের সাথে যোগাযোগ রাখা উচিত বলে মনে করি৷

দারুল উলুমের মুফতিয়ে আজম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকার কী আইন চালু করবে আর সেখানকার আলেমগণ কীভাবে চলবেন তা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার৷ তবে আমরা সর্বদা দ্বীনি মাদারেস, আলেম-উলামার কল্যাণ কামনা করি৷ আমরা উম্মতে মুসলিমার মধ্যে এখতেলাফ নয় এত্তেহাদ দেখতে চাই৷ আল্লাহ পাক উলামাদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি ও মুহাব্বত বাড়িয়ে দিন, সবাইকে কল্যাণকর ফায়সায় উপনিত হওয়ার তাওফিক দিন৷’

এফএফ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ