শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


মেয়ে বিয়ের বয়স নির্ধারণ বিষয়ক আইন করতে হবে বিশেষ ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য রেখে -উবায়দুর রহমান খান নদভী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ফারুক ফেরদৌস

nadviআজ বিশ্ব জুড়ে পালিত হচ্ছে কন্যা শিশু দিবস। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে উত্যাক্তকারীর হামলায় ২ জন কিশোরী নিহত হয়েছে এবং ১ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এইসব সহিংসতা মোকাবেলায় কঠোর আইন করার পাশাপাশি মেয়েদের দ্রুত বিয়ে দেয়াকেও একটি পথ হিসেবে দেখেন সমাজবিজ্ঞানীরা। এই বিষয়টি পর্যালোচনা করে ২০১৪ সালে যে মেয়েদের বিয়ের বয়স নিয়ে আইনের যে খসড়াটি তৈরি হয়েছে সেখানে বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ বছর। আগের আইনে বলা হয়েছিল ১৮ বছরের নীচে মেয়েদের বিয়ে দেয়া যাবে না। নতুন আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ করা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে দেশী বিদেশী বিভিন্ন এনজিও সংগঠন। তাদের যুক্তি ১৮র আগে বিয়ে দিলে মেয়েরা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিয়ের সঠিক বয়স নিয়ে আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে কথা হয় দেশের শীর্ষ আলেম মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর সাথে।

মেয়েদের বিয়ের বয়স নিয়ে বর্তমান আইন ও নতুন আইনের খসড়ার ধরণের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্র নাগরিকদের বিয়ের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে আইন করলেও তা করতে হবে বিশেষ ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য রেখে। সেটা ১৬ হলে ভালো, বিদেশী চাপে আঠারোও করতে হতে পারে, তবে সব ক্ষেত্রেই বিশেষ ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য রেখে আইনটি করতে হবে। জোর করে মানুষকে বিয়ে করা থেকে ফেরানো মানবাধিকার পরিপন্থী।

মাওলানা নদভী বলেন, বিশেষ ক্ষেত্র নির্ধারিত হবে বাবা মা এবং সরকারী কর্তৃপক্ষের যৌথ বিবেচনার ভিত্তিতে। সে ক্ষেত্রে কমিশনার বা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি বা অন্য কোনো সরকারী কর্তৃপক্ষকে নির্ধারিত সময়ের আগে বিয়ের অনুমতি দেয়ার অধিকার দেয়া যেতে পারে। যাতে তার অনুমতিতে বাবা মা বা কন্যার বিয়ে দিতে পারে। যেমন মেয়ের বয়স ষোল বা সতের, সে বিদেশ যাবে পড়াশোনার জন্য, পরিবার ভাবলো বিয়ে করিয়ে দিলে ভালো হবে, ছেলের সাথে যাবে অথবা মেয়ের বয়স ষোল বছর, তার বাবা মা ভাই বোন কেউ নেই। এরকম অবস্থায় বিয়ে দেয়ার সুযোগ তো থাকতে হবে।

১৬ বছর বিয়ের বয়স নির্ধারণের বিরোধী এনজিওগুলোর যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে উবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, আগে বিয়ে দিলে মেয়েদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় বা মাতৃমৃত্যুর হার বাড়ে এই চিন্তাটা ভুল। এই কথার সাথে ইসলামি শরিয়ত একমত নয়। বাংলাদেশে এক প্রজন্ম আগেও মেয়েদের ১৩ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে। সন্তানও হয়েছে। এরপরও দেখা গেছে তারা সুস্থ শরীরে দীর্ঘ জীবন কাটিয়েছে। তাই আগে বিয়ে দিলেই মেয়েদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে বা মাতৃমৃত্যুর হার বাড়বে এটা কথাটা সঠিক নয়।

মেয়ে বিয়ে দেয়ার দায়ে বাবা মাকে জেলে নেয়া পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে মাওলানা নদভী বলেন, মেয়ে ব্যভিচারে জড়িয়ে পড়লে তো বাবা মাকে জেলে নেয়া হয় না। ১৫ বছর বয়সী মেয়েরা ব্যভিচারে জড়িয়ে এবরোশন করতে হয় তখন কি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় না?

তিনি বলেন, স্ত্রীর বয়স বেশি কম হলে বা স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে স্বামী স্ত্রী নিজেদের বিবেচনা অনুযায়ী প্রয়োজনে বাচ্চা দেরিতে নিতে পারে। পারলে আগে নেবে। তিনি মনে করেন, এত বেশি ঘরোয়া ব্যাপারে রাষ্ট্রের নাক গলানো সমীচীন নয়।

এফএফ


সম্পর্কিত খবর