শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


কওমি সনদের স্বীকৃতির আন্দোলনে শাইখুল হাদীস রহ.

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ajijul-haque-copy঳ মুহাম্মদ এহসানুল হক

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয় কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে স্বীকৃতির আলোচনা নতুন করে শুরু হয়েছে। একদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমদের অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। অপরদিকে বর্তমান সরকার যেভাবে স্বীকৃতি দিতে চাচ্ছে, দেশের প্রতিনিধিত্বশীল আলেম উলামাগণ ও বেফাক তা গ্রহণে প্রস্তুত নয়। আলেম সমাজের এই দিধাবিভক্ত ভূমিকার কারণে সৃষ্টি হয়েছে নানান বির্তক। অনলাইন-অফলাইনে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। এহেন পরিস্থিতে আমাদের একটু পেছনে ফিরে আসা প্রয়োজন। দেখা প্রয়োজন আমাদের পূর্বসূরি উলামায়ে কেরাম কিভাবে স্বীকৃতি চেয়েছিলেন। কোন ধরনের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য রাজপথে নেমেছিলেন। বিষয়গুলো আবার নতুনভাবে আলোচিত হওয়া দরকার।

কওমি মাদরাসা শিক্ষা সরকারি স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তার কথা এখন নতুন করে বলার কিছু নেই। দীর্ঘদিন আলোচনা-সমালোচনা ও পর্যালোচনার পর দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেন আরও অনেক আগেই। এদেশের বিরাট একটি জনগোষ্ঠী কওমি মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত। দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে হাজার হাজার কওমি মাদরাসা। শিক্ষা অর্জন করছে লক্ষ লক্ষ ছাত্র। কিন্তু সরকারি হিসেবে এ শিক্ষা মূল্যহীন। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে মাদরাসা শিক্ষার এক ধরনের সরকারি স্বীকৃতি থাকলেও বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের দেশের কওমি পড়–য়া লক্ষ লক্ষ ছাত্র। সামাজিক অবস্থান, কর্মের বিস্তৃত পরিধি, আর বৃহৎ দ্বীনি খেদমতের কথা বিবেচনা করে সচেতন আলেম উলামাদের পক্ষ থেকে কওমি মাদরাসা শিক্ষার সরকারি স্বীকৃতির এই দাবি উত্থাপিত হয়। নিয়মতান্ত্রিক সাধারণ পদ্ধতিতেই আলেম সমাজ সরকারের কাছে এই দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। কিন্তু কয়েক মেয়াদ পার হলেও কোনো সরকারই দাবি বাস্তবায়নে আন্তরিক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কওমি মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকরা সাধারণত কোনো অধিকার আদায়ের জন্য কলেজ ভাসির্টির ছাত্রদের মতো রাজপথের আন্দোলনে অভ্যস্ত নয়। তবুও এক সময় এই ইস্যুতে তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছিল।

স্বীকৃতির সেই আন্দোলন সংগ্রামের কথা স্মরণ করলে যে নামটি হৃদয় ক্যানভাসে ভেসে উঠে, তিনি হলেন শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ.। স্বীকৃতি আদায়ের সংগ্রামে অনেকেই উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ তুললেও সবচেয়ে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছেন শাইখুল হাদীস রহ.। তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন, একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উলামায়ে কেরামকে আরও যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে বাতিলের মোকাবেলা করতে হবে। আলেমদের কর্মপরিধি আরও বিস্তৃত করতে হবে। নিজেদের স্বকীয়তা বিনষ্ট না করে কর্মক্ষেত্রের বহুমুখী সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বীকৃতির কোনো বিকল্প নেই। এ বিশ্বাস ছিল বলেই নব্বই ছোঁয়া জীবনের পড়ন্ত সময়ে তিনি কওমি সনদের স্বীকৃতির দাবি নিয়ে রাজপথে নেমে আসেন।

এই দাবি অনেক পুরোনো হলেও এর পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠন এবং আন্দোলন সংগ্রাম শুরু হয় মূলত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। জোট সরকারের কাছে আলেম উলামাদের আশা আকাক্সক্ষার মাত্রা ছিল আকাশছোঁয়া। আলেমদের পক্ষে সংসদে চার-পাঁচ জন প্রতিনিধি আর সরকারের শরিক দল হওয়ায় এই মাত্রাটা কোনো আকাশকুসুম স্বপ্ন ছিল না।

চারদলীয় জোটের সরকার গঠনের পিছনে আলেম উলামার অবদানের কথা কারো অজানা নয়। শাইখুল হাদীসের নেতৃত্বে সারা দেশের উলামায়ে কেরাম যেভাবে তৎকালীন সরকারের বিপক্ষে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন; শাইখুল হাদীস ও মুফতি আমিনীর কারাবরণসহ জুলুম নির্যাতনের পথপাড়ি দিয়ে উলামায়ে কেরাম ত্যাগের যে নাজরানা পেশ করেছিলেন, ভোটের রাজনীতিতে তা কতোটা কার্যকর হয়েছিল পহেলা অক্টোবরের জোয়ারে জাতির সামনে তা দিবালকের মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে। সেদিনই প্রমাণ হয়েছিল এদেশের রাজনীতিতে ইসলামপন্থিদের ভোট বড় ফ্যাক্টর। জোট সরকারের কাছে এই দাবি বার বার উত্থাপিত হলেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে তারা কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পুরো আমলটা এভাবেই কেটে গেছে। কিন্তু এভাবে লম্বা সময় পার হলেও সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে ফুঁসে উঠে আলেম সমাজ। আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। কওমি সনদের স্বীকৃতির সেই ঐতিহাসিক আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল কয়েকটি ধাপে ।

ছাত্র জনতার সেই উত্তাল তরঙ্গে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শাইখুল হাদীস রহ. বলেছিলেন- কওমি সনদের স্বীকৃতি আমাদের অধিকার। এই অধিকার আদায় করে নিতে হবে। দাবি আদায়ের সংগ্রামে তোমরা প্রস্তুত থেকো। আমি আছি তোমাদের পাশে।

এক. শাইখুল হাদীসের পৃষ্ঠপোষকতায় এই আন্দোলনে ছাত্র সমাজকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করতে ছাত্রদের নেতৃত্বেই ১৫ এপ্রিল’০৫ ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ছাত্র কনভেনশন। ছাত্র জনতার সেই উত্তাল তরঙ্গে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শাইখুল হাদীস রহ. বলেছিলেন- কওমি সনদের স্বীকৃতি আমাদের অধিকার। এই অধিকার আদায় করে নিতে হবে। দাবি আদায়ের সংগ্রামে তোমরা প্রস্তুত থেকো। আমি আছি তোমাদের পাশে। হাজার হাজার ছাত্র জনতার প্রচণ্ড স্লোগানের সাথে মুষ্ঠিবদ্ধ হাত উচিয়ে সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। কনভেনশন ছিল স্বীকৃতির আন্দোলনে একটি টার্নিং পয়েন্ট। এই সম্মেলনের মাধ্যমেই স্বীকৃতির দাবি দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে।

দুই. আন্দোলনের পাশাপাশি শাইখুল হাদীস রহ. ধারাবাহিকভাবে সরকারের কাছে দাবি উত্থাপন করতে থাকেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বেফাক নেতৃবৃন্দসহ সাক্ষাৎ করেন। ব্যক্তিগতভাবে নিজেও কয়েকবার সাক্ষাৎ করে কথা বলার পরও কোনো ভাবান্তর না দেখে চারদলীয় জোটের শীর্ষ বৈঠক বর্জন করেন শাইখুল হাদীস রহ.। স্বীকৃতি না দেয়াকে কেন্দ্র করে অটুট চারদলীয় জোট ভাঙ্গনের উপক্রম হয়। শাইখুল হাদীস রহ. আবারো পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেনÑ স্বীকৃতি দিলে আমরা জোটে আছি, অন্যথায় আমাদের পক্ষে জোটে থাকা সম্ভব নয়। একপর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্বীকৃতির ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

তিন. নীতিগত সিদ্ধান্তের পরও কোন বোর্ডকে দেবে আর কোন বোর্ডকে দেবে না- এসব নিয়ে টালবাহানা শুরু হলে বৃহৎ আন্দোলনের ডাক দেন শাইখুল হাদীস রহ.। ২৫ মে ০৬ জাতীয় উলামা সমাবেশ করেন। বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ আর গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ৫ জুলাই ০৬ মুক্তাঙ্গনে গণমিছিল করেন। গণমিছিল থেকে শাইখুল হাদীস রহ. ১৬ আগষ্ট ০৬ পল্টনে ঐতিহাসিক মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন। ১৬ আগষ্ট ০৬ পল্টন ময়দানে কওমি সনদের স্বীকৃতির দাবিতে সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন তাওহীদি জনতার ব্যাপক অংশগ্রহণে কানায় কানায় পূর্ণ পল্টন ময়দান জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছিল। শাইখুল হাদীসের ঘোষণা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান জনতা প্রহর গুণতে থাকে। স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্রসমাবেশে শাইখুল হাদীস রহ. ঘোষণা করেন, দেশের সিংহভাগ আলেম উলামাদের চাহিদা মোতাবেক একটি একক বোর্ডের অধীনে স্বীকৃতি দিতে হবে, সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে। আমি সরকারকে অনেকভাবে বলেছি, সরকার আমার ভাষা বুঝে নাই। এখন সময় কথা বলবে। স্বীকৃতি না নিয়ে আমরা বাড়ি ফিরে যাবো না।

চার. শাইখুল হাদীসের কণ্ঠে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণায় উদ্বেলিত হয়েছিল গোটা পল্টন ময়দান। গগনবিদারী স্লোগানে উচ্চারিত হচ্ছিল ‘শাইখুল হাদীসের ঘোষণা, স্বীকৃতি ছাড়া যাবো না।’ উত্তাল জনস্রোতকে সাথে নিয়ে মুক্তাঙ্গনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান শুরু করেন শাইখুল হাদীস রহ.। মুহুর্মুহু স্লোগানে গভীর রাতেও কেঁপে উঠতো মুক্তাঙ্গন। শাইখুল হাদীস রহ. স্বশরীরে পাঁচদিন মুক্তাঙ্গনে অবস্থান করেন। হজরতের অবস্থানে মুক্তাঙ্গন সারাদেশের আলেম উলামাদের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়। নিয়মিত বুখারি শরিফের দরস প্রদানে মুক্তাঙ্গন রূপ নিয়েছিল এক ইলমি কাননে। শাইখুল হাদীসকে সামনে রেখে স্বীকৃতি আদায়ের উদ্দেশ্যে তাওহীদি জনতা দীর্ঘ ৫ দিন রাজপথে অবস্থান করে ত্যাগের যে অনুপম আদর্শ স্থাপন করেছিল তা সত্যিই অতুলনীয়। স্বীকৃতির আন্দোলনকে নতুনভাবে আন্দোলিত করেছিল এই অবস্থান কর্মসূচি। এগিয়ে এসেছিল দলে দলে সারা দেশের ছাত্র শিক্ষক আলেম উলামারা। বিশ্ব মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারিত হয়েছিল কওমি অঙ্গনের এ দাবির কথা।

পাঁচ. ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত দীর্ঘ এ আন্দোলনের পথ পাড়ি দিয়ে এক সময় আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সরকার দাবি পূরণের পথে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। টানা পাঁচদিনের অবস্থান কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন শাইখুল হাদীস রহ.। ২১ আগষ্ট ০৬ কওমি মাদরাসা শিক্ষার সরকারি স্বীকৃতির ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। স্বীকৃতির ঘোষণা দিয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হয়। প্রজ্ঞাপনটি ছিল নিম্নরূপ।

১। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ২৯ আগষ্ট ২০০৬ তারিখের শাখা:১৬/বিবিধ-১১)/২০০৩(অংশ) -৮৮৭ সখ্যক প্রজ্ঞাপন মাধ্যমে কেবলমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরবি সাহিত্য এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে শিক্ষকতা, কাজীর দায়িত্ব/ মসজিদের ইমামতির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের কওমি মাদরাসার দাওরা ডিগ্রী এমএ( ইসলামিক স্টাডিজ/আরবি সাহিত্য) ডিগ্রীর সমমানের হিসেবে বিবেচিত হবে মর্মে নীতিগত সিদ্ধান্ত জ্ঞাপন করা হয়।

২। উক্ত প্রজ্ঞাপনের অনুমতিক্রমে সরকার দেশের সকল কওমি মাদরাসার সমন্বয়, উন্নয়ন ও পাবলিক পরীক্ষা গ্রহনের জন্য ‘কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ’ নামে একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

৩। উক্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়রে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন/বিধিবিধান অনতিবিলম্বে প্রনয়ন করা হবে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে, মোঃ মোমতাজুল ইসলাম, সচিব।

শাইখুল হাদীস রহ. স্বশরীরে পাঁচদিন মুক্তাঙ্গনে অবস্থান করেন। হজরতের অবস্থানে মুক্তাঙ্গন সারাদেশের আলেম উলামাদের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়। নিয়মিত বুখারি শরিফের দরস প্রদানে মুক্তাঙ্গন রূপ নিয়েছিল এক ইলমি কাননে। শাইখুল হাদীসকে সামনে রেখে স্বীকৃতি আদায়ের উদ্দেশ্যে তাওহীদি জনতা দীর্ঘ ৫ দিন রাজপথে অবস্থান করে ত্যাগের যে অনুপম আদর্শ স্থাপন করেছিল তা সত্যিই অতুলনীয়।

ছয়. শাইখুল হাদীস রহ. এর ঐতিহাসিক আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে চারদলীয় জোট সরকারই কওমি সনদের স্বীকৃতির ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেই সিদ্ধান্ত আর বাস্তবায়িত হয়নি। জোট সরকার ক্ষমতা ত্যাগ করার পর এলো তত্বাবধায়ক সরকার। ওয়ান ইলেভেনের ঝড়ে হারিয়ে গেলো আমাদের প্রাণের দাবি কওমি সনদের স্বীকৃতির ঘোষণা। কোথায় গেল গেজেট? কোথায় গেল প্রজ্ঞাপন?

আওয়ামী লীগ সরকার গত টার্মে স্বীকৃতি নিয়ে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। মাঝে মাঝে আওয়াজ তুলেছে। আবার সেটা নিরবে হাওয়ায় মিলিয়েও গেছে। কিন্তু এবার আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন করে হাত দিয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রশ্নবিদ্ধ আমূল পরিবর্তনের পর তাদের নজর এবার কওমি মাদরাসার দিকে।

কওমি সনদের স্বীকৃতি প্রদানের ঘোষণা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। প্রতিনিয়ত সূর মিলাচ্ছেন অন্য মন্ত্রীরা। সরকারপন্থি আলেম মাওলানা ফরিদ মাসুদের নেতৃত্বে নতুন কমিটির নামে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমে দ্বীন, বেফাকের নেতৃবৃন্দ এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন পরিস্থিতি। সৃষ্টি হয়েছে বির্তক।

স্বীকৃতির পক্ষে বিপক্ষে মতামতের বিষয় নয়, স্বীকৃতির বিপক্ষে যাওয়ার ও অবকাশ নেই। আমরা চাই স্বৃকীতি হোক। শুধু স্বীকৃতি হোক এটাই বলতে চাই না, সাথে বলতে চাই মাদরাসার স্বকীয়তা বজায় থাকুক। বেফাকের নামে স্বীকৃতি হতে হবে এটা কোন কথা নয়। আমরা চাই দেশের প্রতিনিধিত্বশীল আলেমদের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেয়া হোক। স্বীকৃতিকে কেন্দ্র করে আলেমদের মধ্যে বিভক্তি না আসুক। মন-মননে, আদর্শ ও চেতনায় আমাদের কওমি মাদরাসা আগের মতই বলিয়ান থাকুক।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ