শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


এতেকাফ স্রষ্টার সান্নিধ্যের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

shafiq sadiআমিন হানিফ : আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যমই হল ইবাদত। ইবাদতের শেষ বলে কিছু নেই। বলতে গেলে একজন মুমিনের কল্যাণকর সব কর্মই ইবাদতে গণ্য। তবে নিরর্ধারিত কিছু বিধান শীরধার্য। সে নির্ধারিত বিষয়বিন্যাস পর্যায়ক্রমে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল হিসেবে আমরা পালন করে থাকি। তারই ধারাবাহিকতায় পবিত্র রমযান মাসে নাজাতের দশদিনে অর্থাৎ শেষদশকে, মসজিদে মসজিদে শুরু হয়ে যায় এতেকাফের আমল। পবিত্র রমযানের এই এতেকাফ স্রষ্টার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য আলাদা রকমের নেয়ামত। নৈকট্য অর্জনের জন্য সুক্ষ হাতিয়ার। এর বিধান, ফজিলত, নিয়মকানুন ও নিষিদ্ধ বিষয় নিয়ে গুরুত্ববহ আলোচনা করছেন, কলিপরিষদ বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক, দারুল হিকমা আল ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল, মুফতি শফিক সাদী। তিনি বলেন, পূণ্য লাভের আশায় সব ধরনের পার্থিব সংশ্লিষ্টতা ত্যাগ করে নির্দিষ্ট সময় মসজিদে অবস্থান করাকে এতেকাফ বলে। এর সসময়সীমা সর্বনিম্ন ২৪ ঘন্টা থেকে সর্বোচ্চের সীমা নেই।

মাহে রমযানের শেষ দশকে এতেকাফ পালন করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। অর্থাৎ, প্রাপ্তবয়ষ্ক যে কোন ১/২ জন তা আদায় করলে মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। এতেকাফের জন্য অতিরিক্ত কোন নিয়মকানুন নেই। তবে রোজা অবস্থায় এতেকাফ শর্ত। পুরুষের জন্য মসজিদে এতেকাফ করা। আর নারিগণ আপন ঘরে আদায় করবেন। তাদের জন্য এটাই উত্তম।

এতেকাফের কোন ফজিলত আছে? এ প্রশ্নে মুফতি সাদী বলেন, এতেকাফের ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, এতেকাফকারী সব পাপকর্ম থেকে মুক্ত থাকে, একারণে তার আমলনামায় এতো বেশি সোয়াব লেখা হয় যে, পরকালে এতেকাফকারী তার নেকির খাতা দেখে বিস্ময়াভিভূত হবে। [মিশকাত শরিফ]

জগতের সব মায়াজাল ছিন্ন করে নিজেকে একমাত্র আল্লাহর ধ্যানে লিপ্ত রাখেন একজন এতেকাফকারী। যে সব পার্থিব কাজ মানুষকে স্রষ্টার নৈকট্য থেকে দূরে রাখে, এতেকাফের মাধ্যমে সে ব্যাবধান দূর করে, সান্নিধ্যেরর উচ্চ মাকামে টেনে নেয়। কেননা এতেকাফকারী এতেকাফ অবস্থায় বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করেন। অধিক পরিমাণ দরুদ শরিফ পাঠ করেন। তাওবা এস্তেগফার করেন। ধর্ম বিষয়ে জ্ঞানচর্চা করার সুযোগ পান ও নফল নামায আদায় করে থাকেন। এমনকি শবে কদর তালাশ করার জন্য বেজোড় রাতগুলোতে সুবর্ণ সুযোগ জ্ঞান করে, ইবাদতে লিপ্ত থাকেন।

মুফতি শফিক সাদী বলেন, এতেকাফ কারীর জন্য নিষিদ্ধ কাজসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম, অকারণে মসজিদ থেকে বের হওয়া। যদি ইচ্ছায় বা ভুলে বের হয়ে পড়ে, তাহলে তার এতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। তবে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দেয়া এবং ওজু গোসলের জন্য বের হওয়া যাবে। এতে এতেকাফ নষ্ট হবে না। সবিশেষ কথা হলো, অনেক মহল্লায় দেখা যায়, রমযানের এই মহামহিম নাজাতের দশদিনে এতেকাফ আদায়ের জন্য টাকা দিয়ে ভাড়া করা লোক বসানো হয়। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে এমনটি হয়ে থাকে। এটা গর্হিত কাজ। টাকা দিয়ে সোয়াবের পারিবর্তে পাপ অর্জন। এতেকাফ হবে মহামহিমের সন্তুষ্টি অর্জন। পূর্ণ ভক্তিশ্রদ্ধাসহ রাসুলুল্লাহ সা. এর সঠিক অনুসরণ।

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /এএস


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ