বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩ ।। ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ ।। ১৯ জিলকদ ১৪৪৪


এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দ্বীনমুখী করতে ছুটিতে ৪ উদ্যোগ নিতে পারেন আলেমরা


কাউসার লাবীব

কাউসার লাবীব
শেয়ার

দেশজুড়ে চলছে এসএসসি ও এসএসসি সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষায় এ বছর অংশ নিয়েছে ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী। দেশের মূল ধারার ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে অবস্থান করা বিশাল এই অংশের সিংহভাগই মুসলিম। কিন্তু তাদের সিলেবাসে নেই ধর্মীয় শিক্ষার তেমন গুরুত্ব। যার ফলে তাদের অধিকাংশই ধর্মীয় বিষয়ে অজ্ঞ। তাই জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামি বিষয়াদিতে তাদের ত্রুটি থেকে যায় অনেক ক্ষেত্রে।

বিপুল সংখ্যক এই মুসলিম শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার পরে বেশ বড় একটা ছুটি পেয়ে থাকে। এই অবসরকে কাজে লাগিয়ে তাদেরকে দ্বীন ও ইসলাম বিষয়ে সচেতন করে কীভাবে গড়ে তোলা যায়? সে বিষয়ে কথা বলেছিলাম কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাপরিচালক, শিক্ষাবিদ আলেমে দ্বীন মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী’র সঙ্গে। এ বিষয়ে তিনি ৪টি পরামর্শ তুলে ধরেন-

এক-
এসএসসি ও এসএসসি সমমানের পরীক্ষার্থীদের নিয়ে ওলামায়ে কেরাম বেশ আগে থেকেই নিয়মিত কিছু উদ্যোগ নিয়ে থাকেন। এর মধ্যে তাদেরকে তাবলিগে পাঠানোর বিষয়টি বেশ প্রশংসনীয়। আমাদের দেশে এটা অনেক বছর ধরেই চলে আসছে যে, ‘সচেতন বাবা-মা তাদের সন্তানকে ছুটিতে তাবলিগে পাঠায় এবং তারা সেখানে গিয়ে দ্বীন শেখার চেষ্টা করে।’ এই উদ্যোগটাকে এ বছর আরো বেগবান করা যেতে পারে। কেননা এ বছর এসএসসি ও এসএসসি সমমানে পরীক্ষার্থী বেড়েছে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি।

দুই-
মসজিদের ইমাম-খতিব, ওলামায়ে কেরাম নিজ নিজ এলাকায় দ্বীনমুখী কিছু উদ্যোগ নিতে পারেন। ছোট ছোট সেমিনার করতে পারেন তাদেরকে নিয়ে। উঠতি বয়সী এসব শিক্ষার্থীরা যেন বিপথে না যায়, মাদক-জুয়াসহ অপ্রীতিকর কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে না যায় সে বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করা যেতে পারে। পাশাপাশি আল্লাহ ও তার রাসুলের মহব্বত ও ভালোবাসার বিষয়ে জ্ঞাত করা যেতে পারে।

তিন-
আলেমদের বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থাগুলোও এসএসসি ও এসএসসি সমমানের পরীক্ষার্থীদের নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে তারা বেসিক ইসলামিক এডুকেশন কোর্স, কুরআন শিক্ষা কোর্স, উত্তম আমল-আখলাক শিক্ষা কোর্স, ইসলাহি মজলিস ও তারবিয়াতি কোর্সের আয়োজন করতে পারে। প্রয়োজনে এসব জেনারেল শিক্ষার্থীদের দ্বীনের পথে আগ্রহী করা জন্য কোর্সে ছোট ছোট বিভিন্ন পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।

চার-
এসএসসি ও এসএসসি সমমানের পরীক্ষার্থীদের অধিকাংশই মেয়ে। ছেলেদের মতো মেয়েদেরকেও তাবলিগে পাঠানো যেতে পারে যদি তাদের পরিবারগুলো তাবলিগের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে মাহরামের সঙ্গে তাবলিগে গেলে ইসলাম সম্পর্কে তারা অনেকটাই সচেতন হয়ে উঠবে। আর যাদের পরিবারে এমন ব্যবস্থা নেই তাদের জন্য পরামর্শ হলো, এলাকায় যেসব দ্বীনদার মহিলার উদ্যোগে দৈনিক, সপ্তাহিক ও মাসিক তালিম হয়ে থাকে সেসব তালিমের সঙ্গে এই মেয়ে শিক্ষার্থীদের জুড়ে দেয়া। এর জন্য প্রতিটি এলাকায় উদ্যোগ গ্রহণ করে এসএসসি ও এসএসসি সমমানের মেয়ে পরীক্ষার্থীদের মা-খালার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে; যেন তাদের সন্তানকে অবসরে এসব তালিমে নিয়ে আসে।

পাশাপাশি বর্তমানে দেশে হাজার হাজার মহিলা মাদরাসা রয়েছে, এসব মহিলা মাদরাসাগুলোও জেনারেল মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ফরজিয়াতে দ্বীনের খণ্ডকালীন কোর্স ও তালিমের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ