বুধবার, ৩১ মে ২০২৩ ।। ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ ।। ১১ জিলকদ ১৪৪৪


‘হাতপাখা’র ভোট প্রচারণায় নারী, অনলাইনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া


কাউসার লাবীব

কাউসার লাবীব
শেয়ার

গত ৯ মে প্রতিক পেয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা মার্কার মেয়র পদপ্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। নির্বাচনে বিজয়ী হলে গাজীপুরকে কীভাবে সাজাবেন জনগণকে সে আশ্বাসও দিচ্ছেন তিনি।

ইতোমধ্যে গাজী আতাউর রহমানের হাতপাখার পক্ষে প্রচারণার তোড়জোড় চলছে গাজীপুর সিটিতে। এরই মাঝে বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে; যেগুলোতে দেখা যায় দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় অনেক নেতাই গাজীপুরে হাত পাখার পক্ষে মাঠে নেমেছে।

তবে আজ সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গাজীপুর সিটির প্রচারণার কয়েকটি ছবি শেয়ার করা হয়। যেখানে দেখা যায়, হাত-পা মোজা ও বোরকা পরে হাতপাখার প্রচারণায় নেমেছেন নারীরা। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৪৫ নং ওয়ার্ডে হাতপাখা মহিলা কর্মীদের দাওয়াতি কার্যক্রম।’  এ ছবি দেখে নেটিজেনদের মাঝে পক্ষে-বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়া দেয়া যায়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ওই পোস্টের কমেন্টে জাহিদ হাসান জুনায়েদ নামে একজন লিখেন, ‘মহিলাদের হাতপাখার প্রচার না করাই ভালো। এগুলা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়।’

নাজিবা নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘অসাধারণ দৃশ্য। শরীয়তের হুকুম পর্দা ঠিক রেখে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো প্রশংসনীয়। বর্তমান যুগে অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় অর্ধ উলঙ্গ মহিলারা মিছিল মিটিং করে। আর ইসলামী আন্দোলনের মা-বোনেরা শরীয়তের পর্দা হুকুম মেনে ইসলামী আন্দোলনের প্রচার প্রসার করে তা আসলে প্রশংসনীয়।’

আশিকুল হায়দার মানিক নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘শুধু মসজিদে মহিলা গেলে ফেতনা হবে! আফসোস!!’

মোহাম্মাদ হেদায়েত উল্লাহ নামে একজন লিখেন, ‘মহিলাদের দিয়ে নির্বাচন এর দাওয়াতি কাজটা সমর্থন করতে পারলাম না।’

এইচ.এম.কাওছার বাঙ্গালী নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘নারীরা নারীদের মাঝে দাওয়াতি কাজ পরিচালনা করবে। এটাই উত্তম।’

হাসান আলী নামে একজন লিখেন, ‘আমার একটা প্রশ্ন, বাংলাদেশে নারীদের নিরাপত্তা জনিত অনেক সমস্যা বিদ্যমান। এমতাবস্থায় যদি কোন নারী কোনরকম দুর্ঘটনার শিকার হয়, তার দায়ভার কে নিবে? আমার কাছে কাজটি অযৌক্তিক মনে হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই অংশ নিচ্ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে পাঁচ সিটি করপোরেশনে দলটি তাদের মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলটি। 

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, গাজীপুরে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, খুলনায় দলের নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা আবদুল আউয়াল, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিলেট বিভাগ হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রাজশাহী মহানগর সহসভাপতি হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। 

দলটির নেতারা বলছেন, সরকারের কোনো রকম হস্তক্ষেপ ছাড়া নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে বলেই তারা আশা করেন। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা নির্বাচনে এসেছেন। এ ক্ষেত্রে যদি নির্বাচন কমিশন ব্যর্থতার পরিচয় দেয় তবে আন্দোলনের নতুন মাত্রা যোগ হবে। 

এই নির্বাচনই বলে দেবে জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কতটুকু সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে। এর আগে গত ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সিটি নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে। তপশিল অনুযায়ী, ২৫ মে গাজীপুর, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ৫ সিটিতে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে এবং প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। ভোটগ্রহণের হালনাগাদ তথ্য কর্মকর্তারা ট্যাবের মাধ্যমে কমিশনকে জানাবে।

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলমের তথ্য মতে, প্রতিটি সিটিতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। সব সিটি নির্বাচনে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তারা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গাজীপুর, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন শেষ করা হবে।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ