শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


শিশুপুত্রের উপস্থিতিতে জেল গেটে বাবা-মায়ের বিয়ে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: রাজশাহীর কেন্দ্রীয় কারাগারের গেটে ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে হয়েছে। এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলো তাদের ৯বছরের পুত্র দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। বিয়ের শর্তে ধর্ষকের জামিন পাওয়ার কথা রয়েছে।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, আদালতের নির্দেশে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টার দিকে কনেপক্ষকে জেলগেটে আসার সময় দেওয়া ছিল। কনে ও বরপক্ষের ১৪ জন জেলগেটে উপস্থিত হন। তাদেরকে জেল সুপারের কক্ষে বসানো হয়। পরে সাদা পাঞ্জাবি পরে জানালার পাশে এসে বর দাঁড়ান। জানালার অপর পাশে তার ছেলেকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়।

বন্দী বাবা হাসিমুখেই বিয়ের রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করেন। এসময় পুরোহিত বিয়ের মন্ত্র পাঠ করেন। পরে মালাবদল করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। সিনিয়র জেল সুপারের পক্ষ থেকে কনের হাতে উপহার হিসেবে একটি কাতান শাড়ি দেন।

ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বর বলেন, দীর্ঘ আট বছর ধরে তিনি কারাগারে আছেন। বিয়ে হওয়ায় তার ভালো লাগছে। ধর্ষণের শিকার কনে বলেন, ‘বিয়ের পর ভালো লাগছে।’

সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বলেন, জেল গেটে বন্দীর এটাই প্রথম বিয়ে। এই বিয়ে তিনি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছেন। অতিথি ও কর্মচারীদের মিষ্টিমুখ করানোর ব্যবস্থা করেছেন। বিয়ের প্রতিবেদন তিনি দ্রুত আদালতে পাঠাবেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষকের শিকার নারী ওই ধর্ষকের আত্মীয় ছিলেন। গোদাগাড়ী উপজেলার ওই দুই বাসিন্দাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। ২০১১ সালে মেয়েটি গর্ভবতী হলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান প্রেমিক। ওই বছরের ২৫শে অক্টোবর গোদাগাড়ী থানায় মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন। ২০১২ সালের ২৯শে জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়।

বিচার শেষে ওই বছরের ১২ জুন ধর্ষককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। যখন ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, তখন ওই মেয়ের বয়স ছিল ১৪ বছর। ২০১২ সালে রায়ের পর থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি কারাগারে বন্দী ছিলেন। তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। ২২শে অক্টোবর আবেদনের ওপর শুনানির সময় তার আইনজীবী জানান, আসামি ও ভুক্তভোগী নারী বিয়েতে সম্মত।

গত ২২ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিয়ের আদেশ দেন। বিয়ের পর সে বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। আদালত উভয়পক্ষের সম্মতিতে এ আদেশ দেন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ