বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫


স্বাস্থ্যবিধি মানতে উৎসাহিত করছেন আলেমরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ: কোভিড-১৯ বা নোভেল করোনা ভাইরাস। একটি বৈশ্বিক মহামারী। যার কাছে অসহায় ছিল সারাবিশ্ব। পকেটে কিংবা ঘরে হাজার হাজার কোটি টাকা থাকলেও করোনার কাছে সবাই হয়ে পড়েছিল নিঃস্ব। পৃথিবীর কোনো শক্তিই কাজে লাগছিলো না করোনার মোকাবেলায়। বাধ্য হয়ে মানুষ হয়ে পড়েছিলো জিম্মি। কারো সাথে ছিল না কারো যোগাযোগ। সে এক ভয়ঙ্কর বিবরণ।

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে ঠান্ডায় বেশি শক্তি পায় করোনা ভাইরাস। বর্তমানে চলছে শীতকাল। এজন্য গ্রীষ্মের চেয়েও বেশি মারাত্মক আকার ধারণ করবে শীতকালের করোনা ভাইরাস। এমনটাই বলছেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি তারা বলছেন, বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কী হবে? পূর্বের ন্যায় কোনো সিদ্ধান্ত কী নিতে পারে সরকার?

কথা বলেছিলাম ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি আনিস মাহমুদ এর সাথে। তিনি জানান, সরকারের এখন আর সেই পূর্বের ন্যায় লকডাউনে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ব্যবসা-বাণিজ্য, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শপিংমলগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের। দ্বিতীয়বার লকডাউনের কোনো চিন্তা সরকারের আপাতত নেই। তবে পরিস্থিতি যদি পূর্বের চেয়েও বেশি ভয়াবহ রূপ লাভ করে, তাহলে তখন পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার লকডাউনের চিন্তাও করতে পারেন বলে জানান তিনি।

দেশের মসজিদ-মাদ্রাসা, ওয়াজ- মাহফিল ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে কতটুকু মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি? কিংবা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লী স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে কতটুকু সচেতন? মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষকরাই কতটুকু ভূমিকা রাখছেন স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায়? জানতে চেয়েছিলাম, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হজরত মাওলানা মুফতি মহিউদ্দিন কাসেমীর কাছে। তিনি জানান, মসজিদগুলোতেই পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। এখানে মুসল্লিদেরও উৎসাহিত করা হয় স্বাস্থ্যবিধি মানতে। মাস্ক ছাড়া যেন কেউ মসজিদে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য মসজিদের পক্ষ থেকে জোরালো ব্যবস্থা রয়েছে। কেউ মাস্ক আনতে ভুলে গেলে মসজিদ থেকে মাস্ক সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিনিয়তই মুসল্লীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। শুধু মসজিদেই নয়! ঘরে-বাইরে ও রাস্তায়ও যেন স্বাস্থ্যবিধির লক্ষ রাখে সেজন্য জোরালো আহ্বান জানানো হচ্ছে মসজিদের মেম্বার থেকেই। বায়তুল মোকাররম দেশের জাতীয় মসজিদ হওয়ার সুবাদে এখানে মাস্কের গুরুত্ব একটু বেশিই।

কথা বলেছিলাম, রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত বায়তুন নূর জামে মসজিদের খতিব ও জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসানের সাথে। তিনি জানান, মসজিদ-মাদরাসাগুলো ১০০% স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা পরিচালনা করছি। মাদরাসাগুলোতে পূর্ণভাবে মানা হচ্ছে সরকারের দেয়া স্বাস্থ্যবিধি। শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়তই উৎসাহিত করছি স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য। মাদরাসার বাইরে গেলেও ছাত্ররা যেন পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধির প্রতি লক্ষ্য রাখে সেজন্য উৎসাহ প্রদান করছি আমরা।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মাদরাসা কিংবা মসজিদ বন্ধ করার কোন প্রয়োজন আছে কিনা? এমন প্রশ্ন করলে মাওলানা নাজমুল হাসান জানান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকেই রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করা হয় মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য। এসব প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেলে দোয়া করার পর্যাপ্ত পরিবেশ বজায় থাকবে না। তাই সরকার যেন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত না নেন; এমন পরামর্শ দেন তিনি।

স্বাস্থ্যবিধি মানার উপকারের কথা জানালেন নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুল আউয়াল। তিনি বলেন, একটি মসজিদে যখন মুসল্লিরা নামাজ পড়তে আসেন তখন ইমাম সাহেব যেভাবে বলেন মুসল্লিরা সেভাবেই চলার চেষ্টা করেন। আমি আমার মসজিদের সকল মুসল্লিদের মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য প্রতি নামাজেই উৎসাহিত করে থাকি। আমার মুসল্লিরাও সুন্দরভাবে মাস্ক ব্যবহার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে আসছেন।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ