আওয়ার ইসলাম: তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ান সরকারকে উৎখাত করতে চার বছর আগে যে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান হয়েছিল, তার সঙ্গে জড়িত সাবেক পাইলট, সেনা সদস্য ও অন্যান্য অভিযুক্ত মিলে ৩৩৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত।
আলজাজিরা জানিয়েছে, ২০১৬ সালের ১৫ জুলাইয়ের ওই ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের অভিযোগে প্রায় ৫ শ জনকে আসামি করা হয়েছিল। দেশটির রাজধানী আঙ্কারার পাশের একটি বিমানঘাঁটি থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান নিয়ে দেশটির পার্লামেন্ট ভবনসহ বিভিন্ন জায়গায় বোমা ফেলা হয়।
এ ছাড়া সরকার উৎখাতে ট্যাংক ও হেলিকপ্টার নিয়ে প্রধান সরকারি দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করেন সেনারা। কিন্তু তুরস্কের দেশপ্রেমিক জনগণ জীবন বাজি রেখে সেই অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দেয়। এতে প্রাণ হারান ২৬৫ জন। অবশ্য এর মধ্যে অভ্যুত্থানকারী ১০৪ জন। বাকিরা পুলিশ ও বেসামরিক লোক।
ব্যর্থ ওই অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মুসলিম ধর্ম প্রচারক ও ব্যবসায়ী ফেথুল্লাহ গুলেন জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে এরদোয়ান সরকার। তুর্কি গণমাধ্যম আনাদলু ও ইয়েনিসাফাক বলছে, এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের অন্তত ২৫ পাইলটকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যাদের প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। এর মধ্যে তৎকালীন বিমানবাহিনীর প্রধান আকিন ওজতুর্কও রয়েছেন।
আলজাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আঙ্কারার আদালতে যে হাই-প্রোফাইল মামলার রায় হয়েছে তার আসামি ছিলেন ৪৭৫ জন। এর মধ্যে ১০ জন বেসামরিক লোকও রয়েছে। তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের পর প্রায় ২ লাখ ৯২ হাজার মানুষকে আটক করা হয়। যারা ‘মূলহোতা’ গুলেনের সমর্থক বলে অভিযোগ করা হয় তুর্কি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। বিচারাধীন অবস্থায় প্রায় ১ লাখ মানুষ জেল খাটছেন বলে জানা যায়।
এ ছাড়া অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পর দেড় লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে বহিষ্কার করা হয়। সামরিক বাহিনীর অন্তত ২০ হাজার মানুষ চাকরি হারায়। সর্বশেষ ৩৩৭ জন নিয়ে এ পর্যন্ত ওই ঘটনায় আড়াই হাজারের বেশি মানুষকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত।
-এটি