বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
‘মানতিক; যুগের চাহিদার সাথে মিলে না’ এ ধরেণের কথা অযৌক্তিক: মুফতি হিফজুর রহমান দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’

সভাপতির মিছিলে কে যুক্ত হচ্ছেন আজ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ>

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ। বাংলাদেশ কওমি মাদরাসার শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বেফাকের এ পর্যন্ত সভাপতি ছিলেন মাত্র চারজন। সর্বশেষ সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইন্তেকালের পর শূন্য হয়ে যায় সভাপতির পদটি। আজ সভাপতি নির্বাচনের জন্য বেফাকের আমেলা বৈঠক শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে। সভাপতির মিছিলে আজ কে যুক্ত হচ্ছেন তা জানা যাবে আজকের আমেলা বৈঠক থেকেই। তাই সবার নজর এখন বেফাকের আমেলা মিটিংয়ের দিকে।

এর আগে যারা বেফাকের সভাপতি ছিলেন তারা হলেন,

১। আলহাজ্ব হজরত মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুস রহ.। তিনি বেফাকের প্রতিষ্ঠালগ্ন ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত আমৃত্যু বেফাকের সভাপতি পদে আসীন ছিলেন। তিনি হাজী সাহেব হুজুর হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার দ্বিতীয় প্রধান পরিচালক ছিলেন। তিনি ছিলেন মাসিক আত-তাওহীদ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক।

২। আলহাজ্ব হজরত মাওলানা মুহাম্মদ হারুন ইসলামাবাদী রহ.। আলহাজ্ব হজরত মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুস রহ. এর মৃত্যুর পর সভাপতি নির্বাচিত হোন তিনি। তিনিও বেফাকের আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন।
১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯০ সালে মুসলিমদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘রাবেতা আল আলম আল ইসলামী’ বাংলাদেশ শাখার পরিচালক নিযুক্ত হন।

৩। আলহাজ্ব হজরত হাফেজ মাওলানা নুরুদ্দীন আহমাদ গহরপুরী রহ.। তিনি ছিলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত শায়খুল হাদিস। ১৯৯৬ সালে তিনি দেশের সর্ববৃহৎ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ’ এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন ও মৃত্যু অবধি এ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাকিস্তান আমলে রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে ‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম’ এর নেতা হিসেবে ১৯৭০ এর জাতীয় নির্বাচনে ‘খেজুরগাছ’ প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সিলেটের ‘জামেয়া ইসলামিয়া হোসাইনিয়া গহরপুর’ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম ও শায়খুল হাদিসের দ্বায়িত্বও পালন করেন তিনি।

৪। আলহাজ্ব হজরত মাওলানা শাহ আহমাদ শফী রহ.। হজরত হাফেজ মাওলানা নুরুদ্দীন আহমাদ গহরপুরী রহ. এর মৃত্যুর পর ২০০৫ সালে বেফাকের সভাপতি নির্বাচিত হোন আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ.।১৯১৬ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় জন্মলাভ করেন তিনি। সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর নিবেদিত প্রাণ রাহবার। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আমীর। তিনি একইসাথে দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক ছিলেন।

জানা যায়, অনেক জল্পনা কল্পনার পর শুরু হয়েছে আজকের এ আমেলা বৈঠক। যাত্রাবাড়ীর কাজলায় অবস্থিত বেফাকের কেন্দ্রীয় অফিসের পাশে ‘শাহজালাল কনভেনশন সেন্টার’ এ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ বৈঠক। এর আগে কয়েকবার আমেলা বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও নানা বাধাবিপত্তির কারণে তা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।

জানা যায়, আজকের বৈঠকে বর্তমান মহাসচিব আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস পদত্যাগ করবেন। সে হিসেবে বেফাকের মহাসচিব ও হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যানও নির্বাচন করা হবে আজ।

কওমি শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক মানোন্নয়ন, শিক্ষকদের জন্য সার্ভিস রোল তৈরি, কওমি শিক্ষা সনদের বাস্তবিক রূপরেখা তৈরি, তরুণ আলেমদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, প্রতিযোগিতার মাঠে বেফাককে সর্বদায় অগ্রগামী রাখার নানাবিধ চিন্তাসহ অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে আজকের নির্বাচিত কমিটি।

বেফাকের প্রায় ১৫ বছরের সভাপতি ছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ.। এই প্রথম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. ছাড়া বসেছে বেফাকের কোনো আমেলা বৈঠক। তাই তার অনুপস্থিতি সকল আমেলা সদস্যকে শোকাহত করে তুলেছে। বৈঠকের শুরুতে তার জন্য বিশেষ দোয়াও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত ২২ সেপ্টেম্বরে বেফাক অফিসে খাস কমিটির বৈঠকে আজকের আমেলা বৈঠকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জানা যায়, কওমি মাদরাসার সরকার স্বীকৃত সর্বোচ্চ ফোরাম ‘আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এর গঠনতন্ত্র মোতাবেক বেফাকের সভাপতি যিনি হবেন তিনিই হবেন আল-হাইয়াতুল উলইয়ার সভাপতি। একইভাবে বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতি যিনি হবেন তিনিই আল হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান হবেন। সে হিসেবে বেফাকের শূন্য পদগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে খালি হওয়া আল হাইয়াতুল উলইয়ার পদও আজ পূর্ণ করা হবে বলে জানা গেছে।

বেফাকের আমেলার সদস্যসংখ্যা ১৫৭ জন। তবে এর মধ্যে অনেকেই ইন্তেকাল করেছেন। সবমিলিয়ে শতাধিক সদস্য উপস্থিত হয়েছেন আজকের আমেলা বৈঠকে।

সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে বেফাকের আমেলা বৈঠক শেষ হোক ও শূন্য পদগুলোতে যোগ্য লোক আসুক এমনটাই প্রত্যাশা সারাদেশের ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ জনতার।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ