শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


বেফাকে তদন্ত সাপেক্ষে দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাই

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইউসুফ সুলতান।।

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়াহ বাংলাদেশ- বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা সমূহের অন্যতম বড় শিক্ষাবোর্ড। মাদ্রাসা শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই বোর্ডের অধীনেই পরীক্ষা দিয়ে এসেছি। আলহামদুলিল্লাহ শিক্ষাজীবনের ৫টি বোর্ড পরীক্ষার (১৯৯৯-২০০৮) সবকটিতেই বাবা-মা ও উস্তাযদের দোয়ায় আল্লাহ তায়ালা সম্মিলিত মেধাতালিকায় জায়গা দিয়েছেন। ইবতিদাইয়্যাহতে ২য়, মুতাওয়াসসিতায় ১ম, সানুবিয়া উলইয়াহতে ৪র্থ, ফযীলতে ৮ম এবং তাকমীলে ১ম।

সম্প্রতি একাধিক ফোনালাপ ও ডকুমেন্ট ফাঁস হয়েছে, যা বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতির প্রমাণ বহন করছে। এই বোর্ডের একজন একনিষ্ঠ শিক্ষার্থী ও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে অন্য সবার মত আমিও এতে বেশ মর্মাহত হয়েছি। এমতাবস্থায় এ ব্যাপারে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা, ফাইন্যান্সিয়াল অডিট, অডিট ও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ, প্রমাণিত দুর্নীতিপরায়ণদের দায়িত্ব থেকে বরখাস্তসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দায়িত্বশীল উলামায়ে কেরামের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।

নেতৃত্ব ও দায়িত্বের অপরিহার্য গুণ হলো কবুওয়াহ - শারীরিক, মানসিক ও জ্ঞানগতভাবে কার্যসম্পাদনে সক্ষম হওয়া, আমানাহ - প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তি, সম্পদ ও যাবতীয় দায়িত্বের প্রতি বিশ্বস্ততার স্বাক্ষর দেয়া। মূসা আ. যখন মাদয়ানে যান, শুয়াইব আ. এর এক কন্যা তাঁর বাবার কাছে প্রস্তাব রাখেন যেন মূসাকে আ. কাজে রাখা হয়, কারণ তিনি ক্বাউয়ী এবং আমীন। (সূরা কাসাস: ২৬) ওদিকে ইউসুফ আ. নিজেকে খাদ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রাখার আবেদনে নিজের যোগ্যতা হিসেবে তুলে ধরেন যে তিনি হাফীয ও আলীম। (সূরা ইউসুফ: ৫৫)। হাফীয ও আলীম তথা সংরক্ষণকারী ও জ্ঞানী, এ দুটো পূর্বোক্ত দুটো গুণের ভেতরই আছে। (এ ব্যাপারে আমার বিস্তারিত নোট পড়ুন: https://bit.ly/2ZjGPqG)

মুয়ামালাহ বা আর্থিক লেনদেন হবে stranger বা অপরিচিতের ন্যায়। এখানে বাহ্যিক বেশভূষা, ব্যক্তিগত/আত্মীয়তার সম্পর্ক, বা কোনো রকম আবেগের কোনো স্থান নেই। এখানে সিদ্ধান্ত conduct বা কাজের ভিত্তিতে, intention বা নিয়তের ভিত্তিতে নয়।

আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর সুন্নাহ এমন বানিয়েছেন, যে এতে একটি জাতি টিকে থাকবে ইনসাফের ভিত্তিতে, ঈমান থাকলেই হবে না। আসলে ঈমান নিয়ে জুলুম করা (দুর্নীতি একটি বড় ধরণের জুলুম) নেফাকের পর্যায়ে। দুর্নীতি দেখে চুপ থাকা বা মৌন সমর্থন দেয়া দুর্নীতি করার পর্যায়েই। কেউই আমরা জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নই। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অত্যন্ত সিরিয়াসলি নিবেন।

লেখক: হেড অফ শারিয়াহ, ইথিস মালয়েশিয়া ও কো-ফাউন্ডার আইফা কন্সালটেন্সি ঢাকা।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ