শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


লাইলাতুল ক্বদর: পূণ্যার্জনের শ্রেষ্ঠতম সোপান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাফেজ মাওলানা মূসা আল-কাযীম।।

পবিত্র মাহে রামাদান রহমত মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির পয়গাম নিয়ে প্রত্যেক বছর মুমিনের দ্বারে উপস্হিত হয় ৷ একজন আল্লাহ প্রেমিক বান্দা সারা বছর এ মাসের অপেক্ষায় প্রতিক্ষার প্রহর গুনতে থাকে ৷ এ মাসকে একজন মুমিন তার জীবনের পূণ্য সংগ্রহের সর্বোত্তম সুযোগ বলেই মনে করে ৷ এ মাসে মহান আল্লাহ তা'য়ালার পক্ষ থেকে অজস্র রহমত বারাকাত ও মাগফিরাতের বারিধারা বর্ষিত হতে থাকে ৷

এ মাস সিয়াম সাধনার মাস ৷ অপরদিকে এমাসেই এমন এক রজনী রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠতম ৷ এ রজনীর শ্রেষ্ঠত্বের মূল কারণ এ রজনীতেই মহান আল্লাহ তা'য়ালা লাওহে মাহফূজ থেকে তার পবিত্র ঐশীবাণী, সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব, মহাগ্রন্হ আল কুরআন প্রথম আসমানে নাযিল করেন ৷ সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূলের উপর সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব নাযিল হওয়ায় এ রজনীর মাহাত্ম্য সম্মান সর্বোচ্চ শিখরে অধিষ্ঠিত হয়েছে ৷

লাইলাতুল ক্বদরের শাব্দিক ও পারিভাষিক বিশ্লেষণ>

লাইলাতুল ক্বদর একটি আরবী যৌগিক শব্দ, দুটি শব্দযোগে এর অর্থ দাড়ায় অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত । আরবি ভাষায় ‘লাইলাতুন’ অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী এবং ‘কদর’ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান। এ ছাড়া এর অন্য অর্থ হলো ভাগ্য,পরিমাণ ও ভাগ্য নির্ধারণ করা।

শরীয়তের পরিভাষায় লাইলাতুল ক্বদর হচ্ছে পবিত্র মাহে রামাদানে শেষ দশকের বেজোড় রজনীগুলোর যেকোন এক মহিমান্বিত রজনী ৷ ইসলাম ধর্মানুসারে এ রাতে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর অনুসারীদের সম্মান বৃদ্ধি করা হয় এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই মুসলমানদের কাছে এই রাত অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহিমান্বিত হিসেবে পরিগণিত। কুরআনের বর্ণনা অনুসারে, আল্লাহ তা'য়ালা এই রাত্রিকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন ৷

লাইলাতুল ক্বদরের পটভূমি> ইবনে আবি হাতেম (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের সম্মুখে বনী ইসরাঈলের জনৈক চারজন লোক সম্পর্কে আলোচনা করলেন যে, তারা দীর্ঘ হায়াত লাভ করে অধিককাল যাবত ইবাদত করেছেন। এসময়ের মধ্য তারা একটি নাফারমানিও করেননি ৷ কোথাও এসেছে রাসূল (সাঃ) জনৈক বনী ইসরাঈলের আবেদের কথা উল্লেখ করেছেন যিনি হাজার মাস পর্যন্ত দিনকে আল্লাহর রাহে জিহাদ ও রাতকে নামাযে দন্ডায়মান অবস্হায় কাটিয়েছেন ৷

রাসুলুল্লাহর (সা.) এর যবান মুবারক থেকে এ কথা শুনতে পেরে সাহাবায়ে কিরাম অত্যন্ত বিস্মিত হলেন এবং নিজেদের ব্যাপারে আফসোস করতে লাগলেন যে ,আমাদের এই স্বল্প হায়াতে কি এমন দীর্ঘ সময় ইবাদতের ফজীলত লাভ করা আদৌ সম্ভব হবে ৷ সাহাবায়ে কেরামের এ আফসোসের পরিপ্রেক্ষিতে মহান রাব্বুল আলামিন হযরত জিবরাঈল(আ.)এর মাধ্যমে রাসুল(সাঃ)এর নিকট এমন সময় এই সুরায়ে ‘ক্বদর’ অবতীর্ণ করেন। (তাফসিরে মাআরিফুল কুরআন ও তাফসিরে মাজহারি)।

লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফজীলত > এ রজনীর ফজীলত বর্ণনায় মহান আল্লাহ তা'য়ালা পবিত্র কুরআনে ক্বদর নামে স্বতন্ত্র একটি সূরা নাযিল করেছেন ৷ শুধু কুরআনেই নয় হাদীস শরীফেও এ রজনীর ফজীলত বর্ণনায় একাধিক বর্ণনা এসেছে ৷

ইরশাদ হচ্ছে> আমি একে নাযিল করেছি শবে-ক্বদরে। শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন শবে-ক্বদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে । এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। সূরা আল ক্বদর

ইরশাদ হচ্ছে> হা-মীম। শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের।আমি একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয় আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ ৷ সূরা আদ দুখান,আয়াত ০১-০৬

হাদীসের বাণীতে লাইলাতুল ক্বদর > মিশকাত শরিফে উল্লেখ রয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যদি তোমরা কবরকে আলোকময় পেতে চাও তাহলে লাইলাতুল কদরে জাগ্রত থেকে ইবাদত কর। রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, যদি কেউ ঈমানের সঙ্গে সাওয়াব লাভের খাঁটি নিয়তে লাইলাতুল কদর কিয়ামুল্লাইল বা তাহাজ্জুদে অতিবাহিত করে তবে তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ ক্ষমা করা হবে। (বুখারি, হাদিস নং : ৬৭২)।

লাইলাতুল ক্বদরের দিনক্ষণ> লাইলাতুল ক্বদরের নির্দিষ্ট কোনও তারিখ নেই। অনেকেই মনে করেন ২৭ রমযানই লাইলাতুল ক্বদরের রাত। আসলে এ ধারণাটি সঠিক নয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) কখনও বলেন নি যে, ২৭ রমযানের রাতই ক্বদরের রাত। তবে ২১ রমযান থেকে নিয়ে ২৯ রমযান পর্যন্ত বেজোড় যে কোন রাতই শবে ক্বদর হতে পারে। লাইলাতুল ক্বদরের তারিখের ব্যাপারে নবী করীম (সা.) এরশাদ করেন, আমাকে লাইলাতুল ক্বদর দেখানো হয়েছে, অতঃপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। অতএব তোমরা শেষ দশ রাতের বেজোড় রাতসমুহে তা খোঁজ করবে। (বুখারি, হাদিস নং :৭০৯)।

রাসূল (সা.) আরও বলেন রমযানের শেষ দশদিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ কর। (মুসলিম, হাদিস নং: ১১৬৯)।

একদা হযরত উবায়দা (রা.) নবী করীম (সা.) কে লাইলাতুল কদরের রাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তখন নবীজী সেই সাহাবিকে বললেন রমযানের শেষের দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোকে তালাশ করো। (বুখারি, হাদিস নং: ২০১৭)।

হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যদি কেউ লাইলাতুল কদর খুঁজতে চায় তবে সে যেন তা রমযানের শেষ দশ রাত্রিতে খোঁজ করে। (মুসলিম, হাদিস নং : ৮২৩)। তাই ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ রমযানের রাতগুলোকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

ইবনে মাজাহ শরিফে উল্লেখ রয়েছে, হজরত রাসূল (সা.) বলেন, যে লোক শবে কদর থেকে বঞ্চিত হয় সে যেন সমগ্র কল্যাণ থেকে পরিপূর্ণ বঞ্চিত হল। আবু দাউদ শরিফে উল্লেখ রয়েছে, হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদর পেলো কিন্তু ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে কাটাতে পারলো না, তার মতো হতভাগা দুনিয়াতে আর কেউ নেই। ক্বদরের রাতের ইবাদতের সুযোগ যাতে হাতছাড়া হয়ে না যায় সেজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ দশদিনের পুরো সময়টাতে ইতেকাফরত থাকতেন। (মুসলিম, হাদিস নং : ১১৬৭)।

লাইলাতুল ক্বদরে করণীয়> রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে ‘লাইলাতুল কদর’ লাভ করার জন্য রমযানের শেষ দশরাত জাগ্রত থেকে ইবাদতে কাটিয়েছেন এবং উম্মতে মুহাম্মাদীকেও সারা রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূল (সা.) বলেন, শবে কদর নির্দিষ্ট না করার কারণ হচ্ছে যাতে বান্দা কেবল একটি রাত জাগরণ ও কিয়াম করেই যেন ক্ষান্ত না হয়ে যায় এবং সেই রাতের ফজিলতের উপর নির্ভর করে অন্য রাতের ইবাদত ত্যাগ করে না বসে। তাই বান্দার উচিত শেষ দশকের কোন রাতকেই কম গুরুত্ব না দেয়া এবং পুরোটাই ইবাদাতের মাধ্যমে শবে কদর অন্বেষণ করা।

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা আমি রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম হে আল্লাহর রাসূল আমি যদি ক্বদরের রাত সম্পর্কে অবহিত হতে পারি তবে আমি কি করব? তখন রাসূল (সা.) আমাকে এই দুয়া পাঠ করার জন্য বললেন। ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি’। (তিরমিজি, হাদিস নং : ৩৫১)।

লাইলাতুল কদরের ফজিলত অপরিসীম। তাই সারা রাত জাগরণ করে সঠিকভাবে ইবাদত-বন্দেগীতে মনোনিবেশ করা কর্তব্য। বেশি বেশি নফল নামাজ, তাহাজ্জুদ, সালাতুস তাসবিহ , কুরআন তিলাওয়াত, দান-সাদকা, জিকির-আজকার, তাসবীহ-তাহলীল, অশ্রুসিক্ত নয়নে তাওবা-ইস্তিগফার, দুয়া-দুরূদসহ ইত্যাদি নফল আমলের প্রতি মনযোগী হওয়া একান্ত জরুরি।

লাইলাতুল ক্বদর গোপন থাকার রহস্য> হযরত উবাদা বিন সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত হাদীসের ভাষা থেকে জানা যায়, আল্লাহ পাক এ রাতের নির্দিষ্ট সময় ও তারিখ জানিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ওহিপাঠিয়েছিলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বিষয়টি যখন সাহাবায়ে কেরামকে জানাতে যাবেন, তখনই দু`জন মুসলমানের ঝগড়ার ফলে এ রজনীর বার্তা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মনোজগত থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়। তবে এরপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, হয়তো এর মধ্যে কোনো কল্যাণ লুকিয়ে রয়েছে। তোমরা রমজানের উনত্রিশ, সাতাশ এবং পঁচিশতম রাতে শবে কদর অনুসন্ধান করো ৷

আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত। রাসূল সা. বলেন, “স্বপ্নে আমাকে লাইলাতুল কদর দেখানো হল। কিন্তু আমার এক স্ত্রী আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেয়ায় আমি তা ভুলে গিয়েছি। অতএব, তোমরা তা রামাযানের শেষ দশকে অনুসন্ধান কর ” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-২৮২৫)।

উল্লিখিত হাদীসদ্বয় থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, নবীজী (সাঃ) নিজেই বিষয়টিতে কোন কল্যাণ নীহিত আছে বলে মনে করেছেন কেননা এতে মুমিনগণ শেষ দশকের পুরোটাতেই ক্বদরকে অনুসন্ধার করে নিজের আখিরাতের পাথেয়কে করবে আরো সমৃদ্ধশীল ৷ অপরদিকে যদি লাইলাতুল ক্বদর নির্দিষ্ট করে জানা থাকতো তাহলে বিষয়টির প্রতি ততটা অনুসন্ধান কিংবা গুরুত্ব পরিলক্ষিত হতোনা ৷ নিশ্য়ই স্বাভাবিকভাবেই মূল্যবান অজানা কোন বস্তু খুঁজে পেতে মানুষের পিপাসা ও অনুসন্ধিৎসা থাকে অন্যরকম ৷

লক্ষণীয় > আমাদের মাঝে এক শ্রেণীর মানুষ রয়েছে যারা শুধুমাত্র সাতাইশতম রজনীর অপেক্ষায় থাকে যা অত্যন্ত অজ্ঞতার পরিচয় বটে তার কারন সাতাইশতম রজনীকে নির্দিষ্ট করে ক্বদরের রজনী কেউ বলেননি এমনকি স্বয়ং নবীজী (সাঃ) শুধু সাতাইশতম রজনী কেন কোন রজনীকেই নির্দিষ্ট করে ক্বদরের রজনী উল্লেখ করেননি ৷ তবে বিভিন্ন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞজন শুধুমাত্র অনুমান করে সাতাইশতম কেউ কেউ অন্য রজনীকেও প্রাধান্য দিয়েছেন ৷

সতর্কতা> যারা শুধুমাত্র সাতাইশতম রজনীকে ক্বদরের রজনী মনে করে উদাসীনতার পরিচয় দেয় তারা হয়তো অনেক ক্ষেত্রেই ক্বদরের মতো মহিমান্বিত রজনীর সুফল থেকে বঞ্চিত হন ৷ এ ক্ষেত্রে মাহে রামাদানের শেষের দিকে অনেককেই দেখা যায় ঈদের আগাম প্রস্তুতি স্বরূপ গভীর রাত পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে ব্যস্ত থাকতে ৷ যারফলে হতে পারে সেই বেজোড় রজনীটাই হয়ে গেল মহিমান্বিত ক্বদরের রজনী ৷ যা উদাসীন মুমিন ব্যক্তিটির জন্য চরম দুর্ভাগ্য বৈ কিছু নয় ৷

বর্জনীয় কুসংস্কার > এই হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ রজনীতে সমাজে অনেক কুসংস্কার পরিলক্ষিত হয় যা কোনভাবেই কাম্য নয় ৷ কারন মনে রাখতে হবে শরীয়তের প্রত্যেকটি বিধান,মুমিনকে কুরআন সুন্নাহ মুতাবিক আঞ্জাম দিতে হবে অন্যথায় নিজের মনগড়া কোন আবেগ কিংবা রুসম অনুযায়ী যতবেশী আমলই করা হোকনা কেন তা আল্লাহ এবং তার রাসুল (সাঃ) দৃষ্টিতে সর্বত্রই অগ্রহণযোগ্য

ক্বদরের রজনীতে ঘরে ঘরে হালুয়া রুটির আয়োজন করা,আতশবাজি করা,মসজিদ কিংবা কোন স্হাপনা ঝাড় বাতিতে আলোকসজ্জা করা, ঘরে ঘরে কিংবা মসজিদে মসজিদে লোকজন সমাগম করে তথাকথিত মিলাদ মাহফিল করা, লোকজনের বহর নিয়ে সরবে পাড়ায় পাড়ায় কবর যিয়ারতের বন্দোবস্ত করা , অলিতে গলিতে বন্ধুবান্ধব মিলে আড্ডায় লিপ্ত হওয়া ইত্যাদী এহেন কর্মকান্ড শুধু কুসংস্কারই নয় বরং শরিয়তের এ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিধানের বিকৃতি ও অতিশয় মহিমান্বিত এ রজনীর মাহত্ম্যকে বিসর্জন দেয়া ৷ যা লাভের বিপরীতে মারাত্মক ক্ষতিই বয়ে আনবে ৷

সর্বোত্তম পন্হা> লাইলাতুল ক্বদরের ইবাদত প্রত্যেক মুমিনের ইনফিরাদি (ব্যক্তিগত) আমল যা ইজতিমাঈ(সম্মিলিতভাবে) মসজিদে আদায় করার চেয়ে নিজ গৃহে নির্জনতায় আদায় করা সবচেয়ে উত্তম ৷ তবে হ্যাঁ গৃহে কিংবা নিজ অবস্হানে যদি মনোযোগের সাথে ইবাদত করতে কোন ধরনের অসুবিধা মনে হয় তাহলে মসজিদেও ইবাদত করতে কোন আপত্তি নেই ৷

আসুন মুমিনের জন্য ফজীলতে টইটুম্বুর এ মহিমান্বিত রজনীকে "পূণ্যার্জনের শ্রেষ্ঠতম সোপান" ও জীবনের শেষ সুযোগ ভেবে শেষ দশকের বেজোড় রজনীগুলোকে পরিপূর্ণ ক্বদরদানী করে মহান আল্লাহ তা"য়ালার সান্নিধ্য, আখিরাতের মুক্তি,সৌভাগ্য ও সাফল্যের শীর্ষচুড়ায় আরোহণ করি ৷

শিক্ষক তেজগাঁও রেলওয়ে জামিয়া ইসলামিয়া, খতীব,নূরে দারূসসালাম জামে মসজিদ, বিজি প্রেস সংলগ্ন,শিল্পাঞ্চল,তেজগাঁও, পেশ ইমাম, তেজকুনিপাড়া রেলওয়ে মার্কেট জামে মসজিদ তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ