বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


করোনা ছুটি ও বিভিন্ন দাবিতে চা শ্রমিকদের সংগঠনগুলো

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রফিকুল ইসলাম জসিম
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>

করোনা মহামারি মোকাবিলায় দেশে এখন সাধারণ ছুটি চলছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ রপ্তানিমুখী সব শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। কিন্তু, ছুটি পাননি চা শ্রমিকরা। তাই বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চা-বাগানে কাজ করছেন চা শ্রমিকরা। চা শ্রমিক নেতাদের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতাকেই দায়ী ও চা বাগানগুলো খোলা রেখে প্রশাসনিকভাবে লকডাউন ঘোষণা
একটি অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত মনে করেছেন।

বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দশম বৃহৎ চা উৎপাদনকারী দেশ আর রপ্তানিতে নবম। বর্তমান দেশে ভাইরাসের সংক্রমণের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ২৬ মার্চ/২০২০ থেকে সরকারি-বেসরকারী,কারখানা বন্ধ রয়েছে। তবে, এমন পরিস্থিতিতে
দেড় শতাধিক চা বাগান খোলা রেখে সিলেট বিভাগের সকল জেলা স্ব স্ব প্রশাসনের নির্দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এতে চা বাগানে স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় দেড় লক্ষাধিক শ্রমিক পরিবারের প্রায় ১২ লাখের বেশি চা জনগোষ্ঠী করোনা ঝুঁকি রয়েছেন বলে দাবী করছে চা জনগোষ্ঠীরা।

নাজারেথ তেলুগু ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ও , সিলেট জেলা ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ফেলোশিপে সম্পাদক মিখায়েল পিরেগু
বাংলাদেশের সকল চা শ্রমিকদের পক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট অনুরোধ সহকারে জোর দাবি জানায়- যাথাক্রমে, অন্তত ১ মাসের রেশন অগ্রিম প্রদান করা সহ মজুরি চলমান রেখে অনতি বিলম্ভে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি রোধে চা শ্রমিকদের ছুটি প্রদান করা হোক।

চলমান পরিস্থিতির সংকট মোকাবেলায় ইলেকট্রিক বিল সহ অন্যান্য সকল কমিশন মজুরি হতে কর্তন বন্ধ রাখা। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা রয়েছে। চা বাগানের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা ব্যবস্থার মান উন্নত করে করোনা ভাইরাস ঝুকি রোধে চা শ্রমিকদের সচেতন করা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। সরকার ঘোষিত প্রণোদনার আওতায় অবহেলিত চা শ্রমিকদের যুক্ত করে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করা। কারণ চা শ্রমিকদের অনাহারে রেখে উন্নত দেশের মান কোনদিন ধরে রাখতে পারে না সরকার।

এছাড়াও চা শ্রমিক সন্তানদের সংগঠন জাগরণ যুব ফোরামের সভাপতি মোহন রবিদাস বলেন, গত শুক্রবার এ দাবি নিয়ে একযোগে ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনেসহ মোট ১৩টি স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।

মোহন রবিদাস বলেন তাদের দাবিকৃত ৯ দফা যথাক্রমে, চা বাগানে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তালিকায় অন্তুর্ভুক্ত করা, দেশের সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারী চাকুরীতে কোটা সংরক্ষণ করা, চা বাগানে চা জনগোষ্ঠীর ভ’মি অধিকার নিশ্চিত করা, চা জনগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য একটি কারচারাল একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা, চা বাগানে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা, জাতীয় বাজেটে চা জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্ধ দেওয়া, চা বাগানের বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে একটি কমিশন বা মন্ত্রণালয় গঠণ করা, চা বাগান এলাকায় পর্যাপ্ত সরকারী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা ও চা বাগানের ছঅত্র-ছাত্রীদের কারিগরি প্রশিক্ষণসহ বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদ সহ-সভাপতি মিখা পিরেগু বলেন, চা শ্রমিকদের অমানবিক পরিশ্রমের উপর টিকে থাকা দেশের চা শিল্প এখন জাতীয় জিডিপিতে প্রায় ১% অবদান রাখছে।

পুরো বিশ্বকে স্তম্ভিত করা এই অতিমারীর সময়েও চা শ্রমিকেরা উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে যেখানে বিভিন্ন রপ্তানিযোগ্য শিল্পখাতের শ্রমিকদেরও স-মজুরিতে ছুটি দেয়া হয়েছে। লকডাউনের সময়কালে চা বাগানের এই কর্মযজ্ঞ দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে চা শ্রমিকদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে বাগান মালিকেরা ও সরকার এ বছর নতুন রেকর্ডের স্বপ্নে বিভোর।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ