বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


‘করোনা পরিস্থিতিতে মসজিদে গমনাগমন বিষয়ে শীর্ষ আলেমদের আহ্বান’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>

দেশে বাড়ছে করনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বাড়ছে আতঙ্ক ও ভয়-ভীতি। বরাবরের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গনজমায়েত এড়িয়ে চলার প্রতি বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছেন।

বহির্বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান কিছুটা ভালো হলেও পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

যেহেতু গণজমায়েতই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান উপায়। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি গনজমায়েত হয় মসজিদে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে শতশত মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। জুমার দিনে মুসল্লিদের ঢল নামে মসজিদে মসজিদে।

তাই দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম আজ গণমাধ্যমে একটি বিশেষ বার্তা প্রেরণ করেছেন। যেই বিবৃতিকে ওলামায়ে কেরাম "করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি; মসজিদে গমনাগমন ও জামাত" শিরোনাম দিয়েছেন।

প্রেরিত বিবৃতিতে বলা হয়, "গত ২৯ মার্চ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংস্থাটির মহাপরিচালকের সঙ্গে ওলামায়ে কেরামের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল।

সেখানে বিশেষ দুটি শ্রেণীর মুসল্লিদের মসজিদে আসতে নিষেধ করা হয়, আট শ্রেণীর মুসল্লিদের মসজিদে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয় এবং এ দুই বিশেষ শ্রেণীর বাইরে যারা আছেন, তাদেরকে প্রতিদিনের মতো মসজিদে আসার অনুমতি প্রদান করা হয় পরিপূর্ণ সতর্কতা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা উপর গুরুত্বারোপ করেই।

যেটাকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ "ওলামায়ে‌ কেরামের আহবান" উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, দিন দিন করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে এ ভাইরাসটি।

তাই দেশের মানুষের মনে ভয় এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং এ ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৭ এবং সংক্রমিত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সংখ্যা- ১৩। নিঃসন্দেহে এটি আমাদের জন্য অশনি সংকেত।

আমরা পূর্বে একথাও বলেছিলাম, যদি অবস্থার অবনতি হয়, কোন এলাকা বা জায়গা লকডাউন করে দেওয়া হয়, অথবা সারাদেশে একযোগে কারফিউ জারি করা হয়, তখন সরকার চাইলে মসজিদে মুসল্লিদের গমনাগমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন। পূর্বের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে ওলামায়ে কেরাম এ কথাটিও বলেছিলেন।

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা বলব, যেহেতু পরিস্থিতি খুব একটা ভালোর দিকে এগোচ্ছে না, সংক্রমণের হার ধীরে ধীরে বেড়েই চলছে, এবং জনসমাগম বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, তাই এই মুহূর্তে সরকার যদি চায়, তাহলে মসজিদে গমনাগমনের বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এবং সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দেশের সর্বশ্রেণীর আলেমগনের একাত্মতা থাকবে। তবে অবশ্যই সকলেই নিজ নিজ গৃহে নামাজ আদায় করবেন। সম্ভব হলে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা চাই। এমনকি সম্ভব হলে জুমার নামাজও নিজ নিজ গৃহে জামাতের সাথে আদায় করে নিবেন।"

"তবে কোনক্রমেই মসজিদ বন্ধ করা যাবে না। মসজিদ চালু রাখা ফরজে কেফায়া। তাই যারা সর্বাবস্থায় মসজিদে থাকেন তাদের মাধ্যমে সীমিত পরিসরে জামাত-জুমা অবশ্যই চালু রাখতে হবে।"

এছাড়াও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, "পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের নির্দেশনা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট এবং ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে চলা দেশের সাধারণ মানুষের দায়িত্ব। নিজে সুস্থ থাকুন, আল্লাহর কাছে তওবা করুন। দেশের ও সারাবিশ্বের জন্য কান্নাকাটি করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করুন।"

আজ দুপুর একটার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন দেশের শীর্ষ আলেমগণ। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন, শায়েখ জাকারিয়া রিসার্চ সেন্টারের প্রধান মুফতি মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, আকবর কমপ্লেক্সের প্রধান মুফতি, মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মোহাম্মদপুরের প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ