শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


রমজানে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনে ইতিকাফের গুরুত্ব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা ইমরান খান

পবিত্র মাহে রমজানে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করতে সবচেয়ে বড় সুযোগ শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ বা অবস্থান করা। হজরত আয়িশা রা. বর্ণনা করেন, নবি কারিম সা. আজীবন রমজানের শেষ দশকগুলো ইতিকাফ করেছেন। তাঁর ওফাতের পরও তাঁর বিবিগণ ইতিকাফ করতেন। (বুখারি ও মুসলিম; আলফিয়্যাতুল হাদিস-৫৪৬)

ইতেকাফ শব্দের অর্থ অবস্থান করা বা কোন জিনিসকে বাধ্যতামূলকভাবে ধরে রাখা। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মাসজিদে থাকা ও অবস্থান করাকে মূলত ইতিকাফ বলে।

সুরা বাকারার ১৮৭ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা হচ্ছো মসজিদসমুহে অবস্থান কারী। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, ইতিকাফ কারি মুলত নিজকে গুনাহ থেকে মুক্ত রাখে।

তাকে ইতিকাফের বিনিময় এত অধিক পরিমাণে নেকি দেওয়া হবে, যেন সে সমস্ত নেকই অর্জনকারী ।(ইবনে মাযা)

ইতিকাফ একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ইবাদাত। ইতিকাফের মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে আক্ষরিক অর্থেই বাহ্যত আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যায়।

রমজানের শেষ দশক তথা ২০ রমজান সূর্যাস্তের পূর্ব থেকে ঈদের চাঁদ তথা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া বা ৩০ রমজান পূর্ণ হয়ে ওই দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত (৯ দিন বা ১০ দিন) ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ কিফায়াহ।

কোনো মসজিদে মহল্লার কয়েকজন বা কোনো একজন আদায় করলে সবাই দায়মুক্ত হবে। আর কেউই আদায় না করলে সবাই দায়ী থাকবে। তবে আদায়ের ক্ষেত্রে যিনি বা যাঁরা আদায় করবেন, শুধু তিনি বা তাঁরাই সওয়াবের অধিকারী হবেন।

ইতিকাফ তিন প্রকার। ১. ওয়াজিব, মানতের ইতিকাফ ওয়াজিব। যে ব্যক্তি ইতিকাফ করার মানত করবে তার জন্য ইতিকাফ করা ওয়াজিব।এর জন্য সাওম পালন করা শর্ত

২. সুন্নাতে মুয়াক্কাদা: মাহে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। প্রতি মহল্লায় কম পক্ষে একজন ইতিকাফ করে। সকলের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। যদি কেউ না করে তাহলে তাহলে গোটা মহল্লাবাসি গুনাহগার হবে।

৩. মুস্তাহাব: রমজান মাস ছাড়া অন্য যে কোন সময় ইতেকাফের নিয়ত করে মসজিদে অবস্থান করা মুস্তাহাব। এর নির্ধারিত কোন মেয়াদ নেই। সাওম পালন করাও শর্ত নয়।

রমজানের শেষ দশক চলে আসছে আমাদের মাঝে। এখন থেকে আমাদের আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে ইতিকাফ করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। দুনিয়াবি যত কাজ আছে এখন থেকে অল্প অল্প করে শেষ করে শেষ দশদিনকে আল্লাহর জন্য বরাদ্ধ করে দেয়া উচিত। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এ মহিমান্বিত মাসে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে তার খাস বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করুন। অমিন।

শিক্ষার্থী: ঢাকা কলেজ

-এটি


সম্পর্কিত খবর