আওয়ার ইসলাম: জইশ-ই-মুহাম্মদের প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে জাতিসংঘ। চীন তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বুধবার মাসুদ আজহারকে ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ ঘোষণা করে নিরাপত্তা পরিষদ। একইসঙ্গে তার সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
জম্বু-কাশ্মিরের পুলওয়ামায় নিরাপত্তা বাহিনীর কনভয়ে হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছিল জইশ-ই-মুহাম্মদ। বস্তুত এরপর থেকেই মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে ঘোষণা করার জন্য জাতিসংঘের ওপর চাপ বাড়িয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বেজিং।
নয়াদিল্লির কৌশল ষোল আনাই কাজ দিয়েছে বলে মনে করছেন ভারতীয় রাজনীতি বিশ্লেষকরা। তাদের দাবি, বেজিং যখন মাসুদের ব্যাপারে আপত্তি তুলছিল তখন ওয়াশিংটন, ব্রিটেন, প্যারিস, মস্কোকে দিয়ে জাতিসংঘে ধারাবাহিক চাপ তৈরি করেছে নয়াদিল্লি। এর ফলে বেজিংয়ের উপায়ন্তর ছিল না। চীনের যুক্তিও ছিল দুর্বল।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মাসুদ আজহারের চলাফেরার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। কেউ যাতে তার কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে না পারে সেদিকেও নজর রাখা হবে।
পুলওয়ামা হামলার কয়েকদিনের মধ্যেই ফ্রান্স জাতিসংঘের ১২৬৭ স্যাংশন কমিটিতে মাসুদের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনে। নিরাপত্তা পরিষদে যে ১৫টি দেশ সদস্য, তারা ওই স্যাংশন কমিটিরও সদস্য। ফ্রান্স ওই কমিটিতে মাসুদের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ করার পর আপত্তি তোলার জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমা যেদিন শেষ হচ্ছে, ঠিক সেইদিন, অর্থাৎ ১৩ মার্চ চীন আচমকাই বলে, তাড়াহুড়ো করে কারও বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করানো ঠিক নয়। ব্যাপারটা নিয়ে আরও আলোচনা হোক।
নিয়ম অনুযায়ী জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কোনও প্রস্তাব পেশের পরে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনও দেশ আপত্তি তুলতে পারে। মাসুদের বিরুদ্ধে প্রস্তাবের ক্ষেত্রে সেই সময়সীমা পেরনোর কয়েক ঘণ্টা আগেই আপত্তি তোলে চীন। তবে সেসময় বিবৃতি দিয়ে প্যারিস প্রশাসন জানায়, সন্ত্রাস দমনে ভারতের পাশে থাকবে ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ-র সরকার।
অভিযোগ আছে, ২০০১ সালে কাশ্মীরের বিধানসভায় জঙ্গি হামলার পেছনেও ছিলেন মাসুদ। এই হামলায় ৩০ জন নিহত হয়েছিলেন। ভারতের সংসদেও হামলা চালানোর অভিযোগ আছে জইশ-ই-মুহাম্মদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, জইশ-ই-মুহাম্মদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ২০১৬ সালে পাঠানকোট বায়ুসেনা শিবির এবং ২০১৮ সালে উরির সেনা ছাউনিতেও তারা হামলা চালিয়েছিল।
কেপি