শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


বরকতময় সেহরির জরুরি ৫ মাসয়ালা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি সুহাইল আবদুল কাইয়ূম ।।

আর ক’দিন পরই রহমত, বরকত, মাগফিরাতের মাস রমজান সমাগত। এই মহান মাসের যথাযোগ্য মর্যাদা দান ও এর থেকে পূর্ণাঙ্গ ফায়দা অর্জনের জন্য চাই যথেষ্ট পূর্বপ্রস্তুতি। আসুন, রোজার সেহরি সংক্রান্ত কয়েকটি মাসায়ালা জেনে রাখি।

১. সেহরি খাওয়ার বিধান: রোজা রাখার উদ্দেশ্যে রাতের শেষাংশে কিছু খাওয়াকে সেহরি বলে। অর্ধ-রাতের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময় সেহরি খাওয়া সুন্নাত ও বরকতপূর্ণ কাজ। হাদিস শরিফে আছে, নবি কারিম সা. ইরশাদ করেন, ইহুদী, খৃষ্টান ও আমাদের রোজার মধ্যে পার্থক্য শুধু সেহরি। অর্থাৎ, তারা সেহরি খায় না আর আমরা সাহরি খাই।

তিনি আরও বলেন, সেহরি হলো বরকতপূর্ণ খাবার। অতএব, ক্ষুধা বা খাওয়ার চাহিদা না থাকলেও অন্তত এই সুন্নতের ওপর আমল করার জন্য সেহরি খাওয়া উচিৎ। সেহরি পেট ভরে খাওয়া জরুরি নয়। ক্ষুধা না থাকলে সেহরির নিয়তে এক ঢোক পানি পান করলেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।

২ সেহরি কতক্ষণ পর্যন্ত খাওয়া যাবে: সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত সেহরি খাওয়া বৈধ। মুয়াজ্জিন ভুলে সুবহে সাদিকের পূর্বে আজান দিলেও সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত পানাহার করা যাবে। আর মুয়াজ্জিন আজান দিতে বিলম্ব করলেও সুবহে সাদিকের পর খাওয়া যাবে না।

কেননা, রোজা শুরু হওয়ার সম্পর্ক আজানের সাথে নয়; বরং সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার সাথে। অতএব, আজানের অপেক্ষায় থাকা এবং আজান পর্যন্ত খাওয়া চালু রাখার কোনো সুযোগ নেই। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৯৪।

৩. রাত বাকী আছে ভেবে খাওয়া: রাত বাকী আছে মনে করে কেউ সেহরি খেতে থাকল, পরে জানা গেল সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার পরও সে খেয়েছে, তাহলে তার সেই দিনের রোজা হবে না। পরবর্তীতে কাজা করতে হবে। কাফফারা দিতে হবে না। তবে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তার জন্য পানাহার করার অনুমতি নেই। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৯৪।

৪. সেহরি খেতে না পারলে না খেয়েই রোজা রাখবে: সেহরি খাওয়া সুন্নাত; ফরজ বা ওয়াজিব নয়। অতএব ঘুম না ভাঙ্গা বা অন্য কোনো কারণে সেহরি খেতে না পারলে না খেয়েই রোজার নিয়ত করবে। সেহরি না খাওয়ার কারণে রোজার সাওয়াব একটুও কমবে না। এমনিভাবে সেহরি খেতে না পারার কারণে রোজা ছেড়ে দেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।  -ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ : ৬/৪৯৬, রদ্দুল মুহতার : ২/৪১৯, ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/২০০

৫.সেহরি খাওয়ার উত্তম সময়: সেহরির মুস্তাহাব সময় হলো, সুবহে সাদিকের কিছু পূর্বের সময়। অর্ধ রাতের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময়ে সেহরি খাওয়া মুস্তাহাব। তবে একেবারে শেষ সময় খাওয়া উত্তম।

ফুকাহায়ে কেরাম লিখেছেন, রাতকে ছয় ভাগ করে শেষভাগে সেহরি খাওয়া উত্তম এবং শেষভাগের শেষ অংশে খাওয়া অতিউত্তম। এতে তিনটি উপকার লাভ হয় : ১. শক্তি-সামর্থ্য ও সক্ষমতা ভাল থাকে।, ২. তাহাজ্জুদ পড়ার সৌভাগ্য হয়।, ৩. ফজরের নামাজ জামাতে পড়ার সহজ-সুযোগ লাভ হয়। -রদ্দুল মুহতার : ২/৪১৯

আরএম/


সম্পর্কিত খবর