শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


সন্ত্রাসী টরেন্টের ব্যবহৃত অস্ত্রে লিখিত ঐতিহাসিক চরিত্র ও ঘটনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: গত শুক্রবার (১৫ই মার্চ) নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুইটি মসজিদে চরম মুসলিমবিদ্বেষী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন টরেন্টের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় শতাধিক মুসুল্লি। নৃশংস এ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারায় ৫০ জন নিরাপরাধ মুসলিম।

এখনো আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অর্ধশত মুসলিম নারী-পুরুষ ও শিশু। জুমার নামাজের আগমুহূর্তে মাত্র দশ মিনিটের ব্যবধানে দুইটি ভিন্ন ভিন্ন মসজিদে এই হামলা সংগঠিত হয়।

ব্রেন্টন টরেন্টসহ তার অপর তিনজন সহকারীকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। উগ্র শ্বেতাঙ্গবাদী ও মুসলিমবিদ্বেষী এই সন্ত্রাসীদের হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রে ইতিহাসের মুসলিম বিদ্বেষী বিভিন্ন চরিত্র ও  খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যকার সংগঠিত যুদ্ধসহ বিভিন্ন ঘটনা তারিখসহ অঙ্কিত করা হয়েছে।

ল্যাটিন, সিরিলিক ও জর্জিয় অক্ষর ও সংখ্যায় লিখিত বিভিন্ন তারিখ, ব্যক্তি ও স্থানের এই নামগুলো থেকে সন্ত্রাসীদের বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলোতে লিখিত কিছু ঐতিহাসিক চরিত্র নিম্নরূপ,

অ্যান্টন লুনডিন পিটারসন: সুইডেনে দুই অভিবাসী শিশুকে হত্যাকারী শ্বেতাঙ্গবাদী।

অ্যাকেজান্দ্রে বিসোনেট: ২০১৭ সালে কুইবেক মসজিদে হামলাকারী শ্বেতাঙ্গবাদী, যে হামলায় চল্লিশ জনের মত প্রাণ হারায়।

লুকা ট্রাইনি: ইতালীয় উগ্রবাদী, ২০১৮’র ফেব্রুয়ারীতে কৃষ্ণাঙ্গদের উপর হামলা করে ছয় জনকে আহত করেছে।

জোশে এস্টিবেঞ্জ: ২০০৭ সালে মাদ্রিদে ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিক্ষোভকারী কার্লোস পালোমিনোকে ছুরিকাঘাতকারী স্পেনীয় নিও-নাজি।

বাজো পিভালজেনিন: সপ্তাদশ শতকের সার্ব সামরিক অধিপতি, বলকানে ওসমানীদের বিরুদ্ধে লড়াই করা এই সেনাপতি সার্ব ও ক্রোয়াটদের কাছে বীর হিসেবে সমাদৃত।

চার্লস মর্টেল: ৭৩২ সালে মুসলমানদের বিরুদ্ধে টুরসের যুদ্ধে বিজয়ী ফ্রাঙ্ক রাজা।

জন হুনাইদি: হাঙ্গেরীয় জেনারেল ও ট্রান্সসিলভানিয়ার গভর্নর, ১৪৪১ ও ১৪৪২ পরপর দুই বছর দুই যুদ্ধে তিনি ওসমানীদের পরাজিত করেন।

দ্বিতীয় কন্সটান্টাইন আসেন: বুলগেরিয়ার ওসমানী শাসনের বিরুদ্ধে পাঁচবছর বিদ্রোহের নেতা।

মিলোস অবিলিস: সার্বীয় নাইট, ১৩৮৯ সালে কসোভার যুদ্ধের সমাপ্তির পর ওসমানী সুলতান ১ম মুরাদকে হত্যাকারী।

পিলাউ: স্পেনের রিকুনকুইস্তার সূচনাকারী ভিসগথিক অভিজাত

প্রিন্স ফ্রুযিন: ওসমানীদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী বুলগেরীয় অভিজাত

New Zealand mosque shooter names his ‘idols’ on weapons he used in massacre

সিগিসমুন্ড অব লুক্সেমবার্গ: ১৩৯৬ সালে নিকোপোলিসের ক্রুসেডের মাধ্যমে ওসমানী শাসন থেকে বুলগেরিয়াকে মুক্ত করার ব্যর্থ সেনাপতি

রাইফেলে লিখিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তারিখ, ঘটনা ও সংখ্যার মধ্য থেকে কয়েকটি নিম্নরূপ,

১৪ ওয়ার্ড (14 Words): এটি মূলত একটি রাজনৈতিক স্লোগান যা হিটলারের আত্মজীবনি ‘মাইনক্যাম্প’ থেকে নেওয়া হয়েছে। এর সম্পূর্ণরূপ হল,

“আমরা অবশ্যই আমাদের জনগনের অস্তিত্ব নিশ্চিত করবো এবং শেতাঙ্গ শিশুদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যত।” (We must secure the existence of our people and a future for white children)।

তুর্কি-নিধক (Turcophagus): ওসমানী-তুর্কিদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী সশস্ত্র গ্রীকদের বহুল ব্যবহৃত ডাক নাম।

টুরস ৭৩২:  ৭৩২ সালের টুরস যুদ্ধ, যার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে আরব মুসলমানদের ফ্রান্স অভিযানের সমাপ্তি ঘটে।

কাগুল যুদ্ধ, ১৭৭০: রুশ-তুর্কি যুদ্ধের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি যুদ্ধ, যাতে রাশিয়া শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়।

ভিয়েনা যুদ্ধ, ১৬৮৩: ইউরোপে ওসমানীদের সর্বশেষ সীমা

আক্রা: তৃতীয় ক্রুসেডে অবরোধের (১১৮৯-১১৯১) মাধ্যমে সালাহউদ্দীন আইউবীর নিকট থেকে ইংল্যান্ডের রাজা রিচার্ডের দখলকৃত শহর।

সূত্র: ডেইলি সাবাহ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ