শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


এবার কি দুঃখমোচন হবে আবুল বাজানদারের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: প্রবাদে আছে, ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’। কিন্তু এই গাছের জন্যই যে কারও জীবনে শুরু হতে পারে চরম সমস্যা তা বোধহয় জানতেন না কেউই।

লোকমুখে এখন তিনি পরিচিত ‘গাছ মানুষ’ বা ‘ট্রি ম্যান’ নামে। তবে নামের সঙ্গে গাছ জুড়লেও তার জীবনের সঙ্গে সবুজের সতেজতা জোড়েনি। বরং এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন ওষ্ঠাগত আবুল বাজানদারের।

২৮ বছর বয়সী এ যুবকের দুই হাতের আঙুল দেখলে মনে হবে যেন গাছের ছাল-বাকল দিয়ে তৈরি। অনেক পুরনো গাছের ছাল যেমন শুকিয়ে খরখরে হয়ে যায়, ঠিক তেমনটাই চেহারা হয়েছে আবুলের হাতের।

২৫ দফা অস্ত্রোপচার হয়েছে এই দুই হাতে; সুফল মেলেনি। তবে ২৬তম অস্ত্রোপচারে দুঃখমোচন হবে –এমনটাই আশা আবুল বাজানদারের। তিনি জানান, ‘অভিমান করে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম, যন্ত্রণায় থাকতে না পেরে আবার ফিরছি। ডাক্তাররা পরীক্ষানিরীক্ষা করেছেন। এইবার হয়ত এই হাতের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে।’

শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম জানান, তাকে প্রধান করে আবুল বাজানদারের চিকিৎসায় নতুন করে ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তার আরও কিছু পরীক্ষনিরীক্ষা করা হবে। সেই পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন– ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান সাজ্জাদ খোন্দকার, অধ্যাপক রায়হানা আউয়াল, চর্ম ও যৌন বিভাগের প্রধান রাশেদ মোহাম্মদ অধ্যাপক মুহাম্মদ নওয়াজেশ খান, ডা. লুৎফর কাদের লেনিন এবং প্যাথলজি বিভাগের প্রধান আজিজ আহমেদ খান শীষ।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হাত-পায়ে শেকড়ের মতো গজিয়ে ওঠা বিরল এক জেনেটিক রোগে ভুগছেন আবুল বাজানদার। বিশ্বে এ রোগে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা ছয়জনেরও কম। আর তাদের মধ্যেই একজন আবুল বাজানদার। তবে আবুল ছাড়া বাকিদের অবস্থা নাকি এতটা ভয়াবহ নয় –এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

পেশায় রিকশাচালক আবুলের এ সমস্যার সূত্রপাত ২০১৬ সালে। গতবছর মে মাস থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে শরীরের অন্য অংশেও। আবুল জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকে যাদের সঙ্গে মিশেছেন, তারাও এখন মুখ ফিরিয়ে নেন ঘৃণায়। বাচ্চারা তাকে ভয় পায়।

গত বছর মে মাসে একবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন আবুল। শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু সুফল না পেয়ে অধৈর্য হয়ে পড়েন তিনি। বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়েই পালিয়ে যান হাসপাতাল থেকে।

কেপি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ