বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


জামায়াতে তারাবির নামাজ শুরু হয় কবে থেকে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

arafat_ourislam24মাওলানা মুহাম্মদ আরাফাত : তারাবি। শাব্দিক অর্থ বিশ্রাম গ্রহণ  করা। প্রতি চার রাকাত পর কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়া হয় তাই নাম তারাবি। তারাবি- রমজানের রাতের নামাজ। ইশার পর শুরু হয় ওয়াক্ত। একটি প্রতিষ্ঠিত সুন্নাত। সকল আকেল বালেগের ওপর তারাবি সুন্নতে মুয়াক্কাদা। অযথা ছাড়লে হয় গুনাহ। আবার দেয়া যায় না তার কাযা।

তারাবি। একটি উৎসব আনন্দ আমেজ। তারাবি- একটি ভ্রাতৃত্বের নিদর্শন। একতার সুর। নারীদের জন্য একাকি ঘরে। পুরুষ পড়বে মসজিদে জামাতে। মাথায় সুন্নতি টুপি। হাতে জায়নামাজ। মসজিদ পানে যেন মুসল্লির মিছিল। নেই কোন ভেদাভেদ। ধনী গরিব একসাথে। এক কাতারে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মহান প্রভুর দরবারে। হাতে হাতকড়া পড়ে বিনয়ীর স্বভাবে মুমিন দাঁড়ায় রব্বে কারিমের আদালতে। যেন বিচারকের কাঠগড়ায় আসামির আত্নসমর্পন। যেন মালিকের চরণে নিজেকে সপে দেয়া।

তারাবিতে হাফেজের সুরে কুরআনের বীণ বাজে। মুসল্লি শুনে মুগ্ধ হয়ে। শুনে আবেগ দিয়ে প্রাণভরে। আপ্লুত হয়। বাড়ে ঈমানের চেতনা। তারাবি। খতমে তারাবি। চলে রমজানজুড়ে। তারাবিতে কুরআন খতম নবিজির সুন্নাত। সাহাবি হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবিজি রমজানে তারাবি পড়তে উৎসাহিত করতেন। তবে অপরিহার্যভাবে আদেশ করতেন না। নবিজি বলতেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে রমজানে তারাবি পড়বে তার অতীতের পাপ মাফ করে দেওয়া হবে। বুখারি: ১৯০৫

নবিজি একা পড়তেন তারাবি। জামাতে পড়েন মাত্র তিন দিন। উম্মতের দরদে। ফরজ হয়ে যাবে আশংকায়। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রা. বলেন, নবিজি সা. এক রাত মসজিদে তারাবি পড়লেন। সাহাবিগণ সঙ্গে শামিল হলেন। দিতীয় রাতে মুক্তাদির সংখ্যা বেড়ে গেল। তৃতীয় বা চতুর্থ রাতে নবিজি আর তারাবির জন্য মসজিদে এলেন না। সকালে সবাইকে বললেন, আমি তোমাদের আগ্রহ ও উপস্থিতি লক্ষ করেছি। এ নামাজ তোমাদের উপর ফরজ হয়ে যাবে এ আশংকায় আমি তোমাদের কাছে আসিনি। মুসলিম, খ. ১ পৃ. ২৫৯

তারাবি ২০ রাকাত। নবিজি এর সুন্নত। হযরত সাহাবিগণের ঐক্যমত। ইমামগণের সহিহপথ। উলামায়ে কোরামের এতেকাদ। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.  বলেন, নবিজি সা. রমজানে বিশ রাকাত তারাবি তিন রাকাত বিতির পড়তেন। বায়হাকি, আস সুনানুল কুবরা: ৪৭৯৯

নবিজি সা.এর ওফাত পরবর্তী সময়ে খলিফা হযরত আবু বকর ও হযরত উমর রা. এর শাসনামলের প্রথম বছর তারাবি নবীযুগের মত করেই জামাত ছাড়া চলে। হিজরি ১৪ সালে খলিফা উমর রা. এর শাসনামলের ২য় বছর হযরত উমর রা. সাহাবিদের সাথে পরামর্শক্রমে বিশ রাকাত তারাবি জামাতে আদায়ের রুপ দেন। যা আজও সুপ্রতিষ্ঠিত।  উম্মতের নয়নসিক্ত দৃশ্য।

প্রখ্যাত তাবেয়ি হযরত আ. রহমান  আলকারী র. বলেন, আমি রমজান মাসে হযরত উমরের সাথে মসজিদে গেলাম। দেখলাম, লোকেরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে তারাবি পড়ছে। হযরত উমর বলেন, সকলকে এক ইমামের পেছনে জামাতবদ্ধ করে দিলে মনে হচ্ছে উত্তম হয়।

হযরত উমর রা. কুরআনের ক্বারী হযরত উবাই ইবনে কাব এর ইমামতিতে সকলকে জামাতবদ্ধ করে দিলেন। মুয়াত্তা মালেক

ইয়াযিদ ইবনে রুমানসহ একাধিক বর্ণনাকারি হযরত উমরের যুগে বিশ রাকাত তারাবি জামাতবদ্ধভাবে হওয়ার বর্ণনা করেন।

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ