শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


ঈমানের এ কি আজব সম্পর্ক!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা শাহ আব্দুল মতীন : ঈমান যার নসিব হয় তার কপাল এত বড় হয় যে, আল্লাহপাক নিত্য তাকে দিতেই থাকেন। নে, আরো নে…….। দিতেই থাকেন……, দিতেই থাকেন……। ঘুম থেকে জাগলে বলেন, এই নে, দিলাম তোরে এই বিশাল রাজত্ব। ফজরের দুই রাকআত সুন্নত পড়লো তো এক বিশাল রাজত্ব নসীব হয়ে গেল। আবার ফরয দুই রাকাআত পড়লো তো আগের চেয়ে কয়েক হাজার কোটি গুণ শ্রেষ্ঠ রাজত্ব নসীব হয়ে গেল।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেন, ফজরের দুই রাকআত সুন্নত যে পড়ে আসমান-যমীন থেকে বড় দৌলত ঐ মুহূর্তেই নসীব হয়ে য়ায়। সাত আসমান-যমীন থেকে, পৃথিবী এবং পৃথিবীর মধ্যে যত হীরা-কাঞ্চন-মতি -সোনা-দানা, বাদশাহী এবং সিংহাসন, রাজ মুকুট সব কিছুর চেয়ে অনেক বেশি দামি ফজরের দুই রাকআত সুন্নত। এজন্য মুসলমান কোন কাঙ্গাল জাতির নাম নয়। মুসলমান এমন এক জাতি যে ঈমান তাকে একদমই বাদশাহ বানিয়ে দেয়। ঈমান তাকে এক মুহূর্তে মস্তবড় সিংহাসনের অধিপতি বানায়ে দেয়। কিন্তু সে এমন সিংহাসনের অধিপতি হয়ে সমগ্র বিশ্বের যিনি অধিপতি সে মহান আল্লাহর সঙ্গে, মহান আল্লাহর সামনে সর্বদা তার মাথা নত এবং সে কৃতজ্ঞচিত্তে আল্লাহ সঙ্গে এক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক লালন করে।
কী আজব এ ঈমানী সম্পর্ক! আল্লাহ তিনি মহান আল্লাহ, তিনি মালেক, তিনি খালেক, তিনি বাদশাহ, তিনি রাজাধিরাজ, তিনি মহান স্রষ্টা, মহান লালনকর্তা-পালনকর্তা। কিন্তু তিনি বান্দাকে বলেন, তুমি ঈমানওয়ালা, আমাকে ভালোবাস? আমার রাস্তায় চলবে তুমি? বলে, হ্যাঁ। আল্লাহ বলেন, আচ্ছা, তুমি আমার বন্ধু? আশ্চর্য! এমন আখলাক রব্বুল আলামীনের! আল্লাহপাক কোরআন শরীফে এসব বিষয়ে বলেছেন।

কোরআন না বুঝলে কি করার আছে! কোরআন যারা বুঝেন তাদের কাছে গেলে তো আমাদের জীবন ধন্য হল। মহান রব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে বলেন, اَللهُ وَلِىُّ الَّذيْنَ أمَنُوْا যারা ঈমানওয়ালা আমি আল্লাহ তাদের সকলের বন্ধু লাগি। আমি তাদের অভিভাবক লাগি। আমিই বন্ধু, আমিই অভিভাবক। আমিই দেখ-ভালকারী। ওলী শব্দটা এমন যে, এর মধ্যে সবগুলো অর্থ আছে। ওলী মানে যে নিকটবর্তী, যে ঘনিষ্ঠ, যে অভিভাবক, যে বন্ধু। আল্লাহপাক মুমিনদের জন্য এমন একটা শব্দ বলেছেন যে, আমি তোমাদের ওলী, আমি তোমাদের অভিভাবক। আমি তোমাদের বন্ধু। আমি তোমাদের দেখভালকারী। এ হলেন মহান রব্বুল আলামীন!

অনেক বাবা এমন সুন্দর চরিত্রের হন, মাথায় এমন সতেজ এবং প্রখর বুদ্ধি থাকে, এমন বিন্যস্ত বুদ্ধি থাকে যে সন্তানের সে বাবাও, সন্তানের সে বন্ধুও। সন্তানকে তিনি পিতার আসনে থেকে পরিচালনা করতে জানেন। অভিভাকত্ব করতে জানেন, তার তত্বাবধান করতে জানেন। আবার সন্তানের মনে বন্ধুর ক্ষুধা নিবারণেরও তিনি যোগ্যতা রাখেন। কেউ এমন বাবা হলে তিনি কতইনা ভাল বাবা। কিন্ত আমরা তো অনেকেই পুলিশের মত বাবা। সম্ভবত অনেকেই মনে করে যে, বাবা মানেই মিষ্টার পুলিশ, বা ওসি সাহেব, অথবা দারোগা সাহেব। আরে লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ! বাবা তো সন্তানকে আদর দিয়ে, ভালোবাসা দিযে, মহব্বত দিয়ে পালবে, স্নেহ দিযে পালবে। শাসনের ক্ষেত্রে শাসনের দরকার হলে সীমিত মাত্রায় করা। কিন্ত বাবার ২৪ ঘন্টা এই চরিত্র থাকা চাই না যে, সর্বদা ডান্ডা………

শ্রুতিলিখন : উমায়ের আহমাদ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ